বিষয়বস্তুতে চলুন

আইইউপিএসি পদ্ধতিতে জৈব যৌগের নামকরণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জৈব রসায়নে আইইউপিএসি নামকরণ হলো আন্তর্জাতিক বিশুদ্ধ ও ফলিত রসায়ন সংস্থা (আইইউপিএসি) কর্তৃক প্রস্তাবিত পদ্ধতিগত নামকরণ।[] এই নামকরণের প্রস্তাবনাটি নোমেনক্লেচার অফ অর্গানিক কেমিস্ট্রি-তে (অনানুষ্ঠানিকভাবে ব্লু বুক বলা হয়) প্রকাশিত হয়। আদর্শগতভাবে, প্রত্যেকটি সম্ভাব্য জৈব যৌগের এমন একটি নাম থাকা প্রয়োজন, যা হতে অদ্বৈত গাঠনিক সংকেত বের করা সম্ভব। অজৈব যৌগেরও আইইউপিএসি নামকরণ পদ্ধতি রয়েছে, যার প্রস্তাবনাটি প্রকাশিত হয় নোমেনক্ল্যাচার অফ ইনর্গানিক কেমিস্ট্রি (রেড বুক) বইতে।[]

দৈনন্দিন আলোচনায় দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর নাম এড়াতে বাস্তবে শুধুমাত্র অদ্বৈত এবং পরম সংজ্ঞায়ন ব্যতীত সর্বদা আইইউপিএসি নামকরণ অনুসরণ করা হয় না। কখনো কখনো পূর্বের নামকরণের তুলনায় আইইউপিএসি নামকরণ সহজ হয় (যেমন ইথাইল অ্যালকোহল এর পরিবর্তে ইথানল)। তুলনামূলকভাবে ছোট অণুগুলোর অপদ্ধতিগত নামকরণের চাইতেও এটি সহজ এবং বোধগম্য। তবে সাধারণ অথবা প্রচলিত নামটি তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত এবং তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। এসব অপদ্ধতিগত নাম প্রায়ই যৌগের মূল উৎস থেকে গৃহীত। আবার অতিদীর্ঘ নামগুলো গাঠনিক সংকেতের তুলনায় কম বোধগম্য হতে পারে।

মূলনীতি

[সম্পাদনা]

রসায়নে, যৌগে অবস্থিত বিভিন্ন কার্যকরী মূলকের অবস্থান এবং ধরন বর্ণনা করার জন্য অনেক উপসর্গঅনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। একটি জৈব যৌগ কে নামকরণ এর ধাপসমূহ হলো–

  1. প্রধান কার্বন শিকল চিহ্নিতকরণ: এক্ষেত্রে অবশ্যই ক্রমানুসারে নিম্নোক্ত নীতি সমূহ অনুসরণ করতে হবে–
    1. এতে কার্যকরী মূলকের সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিস্থাপক মূলক থাকতে হবে। যদি একাধিক কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকে তবে সক্রিয়তা ক্রম ব্যবহার করতে হবে।
    2. এতে এর সর্বোচ্চ সংখ্যক দ্বিবন্ধন কিংবা ত্রিবন্ধন থাকতে হবে।
    3. এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক একক বন্ধন থাকতে হবে।
    4. এর দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হতে হবে।
  2. সর্বোচ্চ ক্রমানুসারে মূল কার্যকরী মূলক সনাক্তকরণ:
  3. পার্শ্ব শিকল সনাক্তকরণ: পার্শ্বশিকল হলো সেসব কার্বন শিকল যেগুলো মূল শিকল নয় কিন্তু এর শাখা।
  4. যদি কোনো সহকারী কার্যকরী মূলক থাকে, তবে তাদের আয়নিক উপসর্গ অনুসারে নামকরণ (যেমন– -OH এর জন্য হাইড্রোক্সি, =O এর জন্য অক্সি, O-R এর জন্য অক্সিঅ্যালকেন ইত্যাদি)।
    ইংরেজি বর্ণমালার ক্রমানুসারে বিভিন্ন শাখা শিকল এবং কার্যকরী মূলকগুলো গ্রুপ করা হবে। এক্ষেত্রে সংখ্যা মূলক উপসর্গগুলো বিবেচনা করা হবে না (যেমন ডাই-, ট্রাই- ইত্যাদি)। যখন পার্শ্ব শিকল এবং সহকারী কার্যকরী মূলক উভয়ই উপস্থিত থাকে , তখন তাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপে লেখার পরিবর্তে একই গ্রুপে লিখতে হবে।
  5. দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধন শনাক্তকরণ।
  6. শাখাটি ক্রমাংকিতকরণের জন্য প্রথমে শাখাটিকে উভয় দিক (বাম থেকে ডান এবং ডান থেকে বাম) থেকে সংখ্যায়িত করা হয়। অতঃপর নিম্নোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে সঠিক সংখ্যায়ন বেছে নেয়া হয়–
    1. সবচেয়ে নিকটবর্তী কার্যকরী মূলক অর্থাৎ যার সবচেয়ে কাছ থেকে কোন কার্যকরী মূলক সরাসরি যুক্ত রয়েছে;
    2. যার সবচেয়ে নিকটবর্তী কার্বনে একাধিক বন্ধন রয়েছে; এবং
    3. সবচেয়ে নিকটবর্তী কার্বনের কোন প্রতিস্থাপক যুক্ত রয়েছে।
  7. বিভিন্ন প্রতিস্থাপক এবং বন্ধনকে তাদের কার্বনসংখ্যার ভিত্তিতে সংখ্যায়িতকরণ: যদি একই ধরনের প্রতিস্থাপক কিংবা দ্বিবন্ধন একাধিক বার থাকে তবে তাদের সংখ্যার ভিত্তিতে উপসর্গ যুক্ত করা হয় (যেমন– দুটির জন্য ডাই, তিনটির জন্য ট্রাই, চারটির জন্য টেট্রা ইত্যাদি)।

সে ধরনের পার্শ্বশিকলে অবস্থিত প্রতিস্থাপকের সংখ্যায়ন পার্শ্বশিকলের নামের পূর্বে অবরোহী পদ্ধতিতে লেখা হয়। একই আলফা কার্বন বিশিষ্ট দুটি পার্শ্বশিকল থাকলে সংখ্যাটি দুইবার লেখা হয়, যেমন: ২,২,৩-ট্রাইমিথাইল-। যদি দ্বিবন্ধন এবং ত্রিবন্ধন উভয় থাকে তবে আইন (ত্রিবন্ধন) এর পূর্বে ইন (দ্বিবন্ধন) লেখা হয়। যদি প্রধান কার্যকরী মূলক সমাপ্তি কার্যকরী মূলক (যে মূলক শুধু মাত্র শিকলের শেষে অবস্থান করে, যেমন– কার্বক্সিল মূলক, ফর্মাইল মূলক) হয় তবে এতে সংখ্যায়নের প্রয়োজন নেই।

  1. এই পদ্ধতিতে বিন্যাসকরণ: ধাপ ৩-এর প্রস্তুতকৃত সংখ্যায়িত কার্যকরী মূলক এবং পার্শ্ব শিকল + প্রধান শিকলের হাইড্রোকার্বন এর উপসর্গ + সংখ্যাসহ দ্বিবন্ধন/ত্রিবন্ধন (অথবা এন) + সংখ্যাসহ প্রধান কার্যকরী মূলক
    সংখ্যা বলতে সংখ্যাসূচক শব্দ বোঝানো হয়েছে।
  2. চিহ্ন যোগ:
    1. সংখ্যাগুলোর মাঝে কমা ব্যবহৃত হয় (২ ৫ ৫ হয়ে যাবে ২,৫,৫)
    2. সংখ্যা এবং বর্ণের মাঝে হাইফেন ব্যবহৃত হয় (২ ৫ ৫ ট্রাইমিথাইলহেপ্টেন হয়ে যাবে ২,৫,৫-ট্রাইমিথাইলহেপ্টেন)
    3. দুটি পাশাপাশি শব্দকে একত্র করা হয় অর্থাৎ মাঝখানে কোনো ফাঁকা স্থান থাকে না (ট্রাই মিথাইল হেপ্টেন হয়ে যায় ট্রাইমিথাইলহেপ্টেন)
      (বি.দ্র.: আইইউপিএসি সর্বদা এক শব্দ নামকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করে। এ কারণে সবগুলো অংশ পরস্পর সংযুক্ত।)

চূড়ান্ত নামকরণটি এমন দেখাবে:

 #,#-ডাই<পার্শ্বশিকল>-#-<সহকারী কার্যকরী মূলক>-#-<পার্শ্বশিকল>-#,#,#-ট্রাই<সহকারী কার্যকারী মূলক><প্রধান শিকলের অনুসর্গ><যদি সবগুলো বন্ধন একক বন্ধন হয় তবে "এন" যুক্তকরণ>-#,#-ডাই<দ্বিবন্ধন>-#-<ত্রিবন্ধন>-#-<প্রধান কার্যকরী মূলক>

বি.দ্র.: এখানে # কোন সংখ্যার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। পার্শ্ব শিকল এবং সহকারী কার্যকরী মূলকগুলো দেখানো উপায়ে নাও হতে পারে, কেননা সে গুলোকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে সাজাতে হবে। ডাই- এবং ট্রাই- শুধুমাত্র তাদের সংখ্যার জন্য ( #,# এর পর ডাই-, #,#,# এর পর ট্রাই- ইত্যাদি)

উদাহরণ

এখানে প্রধান কার্বন সংখ্যায়িত একটি যৌগের নামকরণ দেখানো হলো:

জটিলতা পরিহারের জন্য প্রধান শিকলে হাইড্রোজেন গুলো অপসারণ এবং কার্বন গুলো দেখিয়ে একই যৌগের নামকরণ দেখানো হলো:

এখন উপর্যুক্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করে:

  1. প্রধান কার্বন শিকল এর ২৩ টি কার্বন রয়েছে। একে বলা হয় ট্রাইকোসা-।
  2. সক্রিয়তা ক্রমানুসারে প্রধান কার্যকারী মুলক দুটো কিটোন মূলক
    1. মূলক গুলো ৩নং এবং ৯নং কার্বন এর সাথে সংযুক্ত। যেহেতু দুটি রয়েছে তাই লেখা হবে ৩,৯-ডাইওন।
    2. কিটোন মূলক অনুসারে যৌগটির সংখ্যায়ন করা হবে। যখন বাম থেকে ডানে সংখ্যায়িত করা হয় কিটোন মূলকগুলো ৩নং ও ৯নং কার্বন থাকে। কিন্তু যখন ডান থেকে বামে সংখ্যায়িত করা হয় তখন কিটোন মূলকগুলো ১৫ নং ও ২১নং কার্বন থাকে। যেহেতু ৩, ১৫-র চেয়ে ছোট তাই কিটোন মূলকগুলো ৩নং ও ৯নং হিসেবে সংখ্যায়িত করা হবে। লক্ষনীয় যে ক্ষুদ্রতর সংখ্যাটি ব্যবহৃত হয়, সংখ্যাগুলোর সমষ্টি নয়।
  3. পার্শ্ব শিকল সমূহ হলো: ৪নং কার্বনে একটি ইথাইল- , ৮নং কার্বনে আরেকটি ইথাইল- এবং ১২নং কার্বনে একটি বিউটাইল-
    বি.দ্র.: ১৫নং কার্বনের -O-CH3 কোনো পার্শ্বশিকল নয় বরং এটি মিথোক্সি মুলক
    • দুটি ইথাইল মূলক রয়েছে তাই এদেরকে সংযুক্ত করে পাই ৪,৮-ডাইইথাইল।
    • পার্শ্ব শিকলগুলোকে গ্রুপ করা হয়: ১২-বিউটাইল-৪,৮-ডাইইথাইল। তবে এটি চূড়ান্ত নয়, কেননা আরো কার্যকরী মূলক যুক্ত হতে পারে (এবং নিশ্চিত করতে হবে যে এরা বর্ণানুক্রমিকভাবে সাজানো হয়েছে)।
  4. সহকারী কার্যকরী মূলকগুলো হলো: ৫নং কার্বনের একটি হাইড্রোক্সি, ১১নং কারণে একটি ক্লোরো, ১৫নং কারণে একটি মিথোক্সি এবং ১৮নং কার্বন এ একটি ব্রোমো। পার্শ্ব শিকলের সঙ্গে গ্রুপ করে পাওয়া যায় ১৮-ব্রোমো-১২-বিউটাইল-১১-ক্লোরো-৪,৮-ডাইইথাইল-৫-হাইড্রোক্সি-১৫-মিথোক্সি
  5. দুটি দ্বিবন্ধন রয়েছে, একটি ৬নং ও ৭নং কার্বনে এবং অপরটি ১৩নং ও ১৪নং কার্বনে: এদেরকে বলা হবে ৬,১৩-ডাইইন; অন্যদিকে ১৯নং ও ২০নং কার্বনের একটি ত্রিবন্ধন রয়েছে। একে বলা হবে ১৯-আইন।
  6. চিহ্ন সহকারে বিন্যাসটি হলো: ১৮-ব্রোমো-১২-বিউটাইল-১১-ক্লোরো-৪,৮-ডাইইথাইল-৫-হাইড্রোক্সি-১৫-মিথোক্সিট্রাইকোসা-৬,১৩-ডাইইন-১৯-আইন-৩,৯-ডাইওন।
  7. সর্বশেষে সিস-ট্রান্স সমানুতার কারণে প্রত্যেকটি দ্বিবন্ধন এর সাপেক্ষে কার্যকরী মূলকের অবস্থান উল্লেখ করতে হবে। এই উদাহরণ এর জন্য ৬E,১৩E

অবশেষে নামকরণটি হলো:

(৬E,১৩E)-১৮-ব্রোমো-১২-বিউটাইল-১১-ক্লোরো-৪,৮-ডাইইথাইল-৫-হাইড্রোক্সি-১৫-মিথোক্সিট্রাইকোসা-৬,১৩-ডাইইন-১৯-আইন-৩,৯-ডাইওন

হাইড্রোকার্বনসমূহ

[সম্পাদনা]

অ্যালকেন

[সম্পাদনা]

সরল শিকল বিশিষ্ট অ্যালকেন গুলো শেষে "-এন" অনুসর্গ যুক্ত থাকে এবং কার্বন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে আদর্শ নিয়ম অনুযায়ী উপসর্গ যুক্ত হয় প্রথম কয়েকটি হল:

কার্বন সংখ্যা ১০১১১২১৩১৪১৪১৬১৭১৮১৯২০
উপসর্গ মিথইথপ্রোপবিউটপেন্টহেক্সহেপ্টঅক্টননডেকআনডেকডোডেকট্রাইডেকটেট্রাডেকপেন্টাডেকহেক্সাডেকহেপ্টাডেকঅক্টাডেকননাডেকআইকোস

উদাহরণস্বরূপ সবচেয়ে সরল অ্যালকেন হলো CH4 (মিথেন) এবং নয় কার্বন বিশিষ্ট অ্যালকেন হলো CH3(CH2)7CH3 (ননেন)। প্রথম চারটি অ্যালকেনের নাম যথাক্রমে মিথানল, ইথার, প্রোপানয়িক অ্যাসিড এবং বিউটাইরিক অ্যাসি হতে উদ্ভূত। ননেন (যা লাতিন উপসর্গ থেকে), আনডেকেন ও ট্রাইডেকেন (যা মিশ্র ভাষা উপসর্গ) ব্যতীত অন্যান্য উপসর্গগুলো গ্রিক সাংখিক উপসর্গ।

চাক্রিক অ্যালকেনগুলোর পূর্বে "সাইক্লো-" উপসর্গ যুক্ত থাকে: উদাহরণস্বরূপ C4H8 হলো সাইক্লোবিউটেন (বিউটেন নয়) এবং C6H12 হলো সাইক্লোহেক্সেন (হেক্সেন নয়)।

IUPAC-alkane-1.svgIUPAC-alkane-2.svg

শাখাযুক্ত অ্যালকেন গুলোকে সংযুক্ত অ্যালকাইল মূলকগুলোর সরল শিকল হিসেবে নামকরণ করা হয়। অ্যালকেন শিকলের শেষ থেকে হিসাব করে কার্বন সংযুক্তির সংখ্যাটি মূল নামের পূর্বে উপসর্গ হিসেবে যুক্ত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সাধারণভাবে আইসোবিউটেন নামে পরিচিত (CH3)2CHCH3 কে মাঝখানের ২নং কার্বনে মিথাইল মূলক সংযুক্ত প্রোপেন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং পদ্ধতিগতভাবে এর নাম ২-মিথাইলপ্রোপেন। যদিও ২-মিথাইলপ্রোপেন নামটি ব্যবহার করা যায়, তবে শুধুমাত্র মিথাইলপ্রোপেন ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে সহজ এবং যৌক্তিক, কেননা মিথাইল মূলক ২নং কার্বন ছাড়া অন্য কোথাও যুক্ত হতে পারবে না। ফলে ২ লেখা অপ্রয়োজনীয়।

যদি কোন দিক থেকে ১নং কার্বন ধরা হয়েছে এর উপর ভিত্তি করে প্রতিস্থাপকের অবস্থানের জটিলতা সৃষ্টি হয়, তবে ক্ষুদ্রতম সংখ্যাটি বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ (CH3)2CHCH2CH3 (আইসোপেন্টেন) কে ২-মিথাইলবিউটেন নামকরণ করা হয়, ৩-মিথাইলবিউটেন নয়।

যদি একই আকারের অ্যালকাইল মূলকের একাধিক পার্শ্ব শিকল থাকে তবে তাদের অবস্থানকে কমা দ্বারা পৃথক করা হয় এবং মূলকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ডাই, ট্রাই, টেট্রা ইত্যাদি উপসর্গ যোগ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ C(CH3)4 (নিওপেন্টেন) এর নাম ২,২-ডাইমিথাইলপ্রোপেন। যদি বিভিন্ন মূলক থাকে তবে তাদেরকে হাইফেন দ্বারা সংযুক্ত করে লেখা হয়। সম্ভাব্য বৃহত্তম অ্যালকেন শিকলটিকে প্রধান শিকল ধরা হয় ফলে ২,৩-ডাইইথাইলপেন্টেন এর পরিবর্তে ৩-ইথাইল-৪-মিথাইলহেক্সেন হবে। পার্শ্ব শিকলের বর্ণানুক্রমিক সাজানোর ক্ষেত্রে ডাই, ট্রাই, টেট্রা ইত্যাদি উপসর্গ বিবেচনা করা হয় না।

IUPAC-alkane-4.svgIUPAC-alkane-5.svg

অ্যালকিন

[সম্পাদনা]

অ্যালকিনসমূহকে তাদের মূল অ্যালকেন শিকলের নামের পূর্বে একটি সংখ্যা (যা কততম কার্বন দ্বিবন্ধন রয়েছে তা প্রকাশ করে) এবং নামের শেষে -ইন অনুসর্গ যুক্ত হয় নামকরণ করা হয়। যেমন CH2=CHCH2CH3 হলো বিউট-১-ইন। একাধিক দ্বিবন্ধন থাকলে দ্বিবন্ধন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ডাইইন, ট্রাইইন ইত্যাদি অনুসর্গ যুক্ত হয়: CH2=CHCH=CH2 এর নাম বিউট-১,৩-ডাইইন। সরল সিস এবং ট্রান্স সমাণুকে সিস- বা ট্রান্স- উপসর্গ দ্বারা প্রকাশ করা হয়: সিস-বিউট-২-ইন, ট্রান্স-বিউট-২-ইন। তবে সিস- এবং ট্রান্স- হল আপেক্ষিক নির্দেশক। কান-ইনগোল্ড-প্রীলগ প্রাধান্য নীতি অনুযায়ী সকল পরম সমাণুকে Z- (সমপার্শ্বীয়) এবং E- (বিপরীত) দ্বারা প্রকাশ করাই আইইউপিএসি এর রীতি।

অ্যালকাইন

[সম্পাদনা]

অ্যালকাইন সমূহকে ত্রিবন্ধন নির্দেশকারী -আইন অনুসর্গ যুক্ত করে নামকরণ করা হয়: ইথাইন (অ্যাসিটিলিন), প্রোপাইন (মিথাইল অ্যাসিটিলিন)।

বিভিন্ন কার্যকরী মূলক

[সম্পাদনা]

হ্যালোঅ্যালকেন ও হ্যালোঅ্যারিন

[সম্পাদনা]

হ্যালো অ্যালকেন এবং হ্যালোএরিনে (R-X) হ্যালোজেন কার্যকরী মূলক গুলো পূর্বে তাদের বন্ধন অবস্থান এবং হ্যালোজেনের উপর ভিত্তি করে ক্লোরো-, ফ্লোরো-, ব্রোমো-, আয়োডো- ইত্যাদি উপসর্গ যুক্ত হয়। একাধিক মুলক থাকলে ডাইক্লোরো, ট্রাইক্লোরো ইত্যাদি এবং অসদৃশ মুলক থাকলে পূর্বের ন্যায় বর্ণানুক্রমিকভাবে সাজানো হয়। উদাহরণস্বরূপ, CHCl3 (ক্লোরোফর্ম) হল ট্রাইক্লোরোমিথেন। চেতনানাশক হ্যালোথেন (CF3CHBrCl) এর নাম 2-bromo-2-chloro-1,1,1-trifluoroethane.

অ্যালকোহল

[সম্পাদনা]

অ্যালকোহলসমূহের (R-OH) নামের শেষে অল অনুসর্গ এবং পূর্বে বন্ধন অবস্থান সূচক সংখ্যা যুক্ত করে নামকরণ করা হয়: CH3CH2CH2OH হল propan-1-ol। একাধিক -OH মূলক থাকলে -diol, -triol, -tetraol ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়: Ethylene glycol CH2OHCH2OH এর নাম ethane-1,2-diol।

যদি অধিক প্রাধান্যপ্রাপ্ত কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকে (নিচে সক্রিয়তা ক্রম, দেখুন), তবে বন্ধন অবস্থা সূচক সংখ্যার সঙ্গে হাইড্রক্সি উপসর্গ যুক্ত হয়: CH3CHOHCOOH হল 2-hydroxypropanoic acid.

দুটি কার্বন শিকল এর মাঝে একটি অক্সিজেন পরমাণু সংযুক্ত হয়ে ইথার (R-O-R)গঠন করে। দুটি শিকলের মধ্যে ক্ষুদ্রতর শিকলটির নামের শেষে -এন অনুসর্গ -অক্সি অনুসর্গে পরিবর্তিত হয়ে নামের প্রথম অংশ হয় এবং বৃহত্তর অ্যালকেন শিকলটি ইথারের নামের শেষাংশ হয়। ফলে CH3OCH3 এর নাম মিথোক্সিমিথেন এবং 3OCH2CH3 এর নাম মিথোক্সিইথেন (not ethoxymethane)। যদি প্রধান অ্যালকেন শিকলে শেষে অক্সিজেনযুক্ত না থাকে, তবে ক্ষুদ্রতর alkyl-plus-ether মূলকটি পার্শ্বশিকল হিসেবে বিবেচিত হয় এবং অবস্থান সংখ্যাসহ নামের প্রথমে যুক্ত হয় ফলে CH3OCH(CH3)2 এর নাম 2-methoxypropane।

অন্যভাবে ইথারকে অ্যালকেন শিকলে অক্সিজেন দ্বারা কার্বন প্রতিস্থাপিত শিকলরূপে নামকরণ করা যেতে পারে, যাতে অক্সা- উপসর্গ দ্বারা প্রতিস্থাপন বুঝায়। উদাহরণস্বরূপ CH3OCH2CH3 কে 2-oxabutane ও বলা যেতে পারে এবং একটি এপোক্সাইডকে অক্সাসাইক্লোপ্রোপেন বলে যেতে পারে। বিশেষ করে যখন অক্সিজেন পরমাণুর সাথে সংযুক্ত শিকলগুলো জটিল হয়ে থাকে তখন এই পদ্ধতিটি কার্যকর। []

অ্যালডিহাইড

[সম্পাদনা]

অ্যালডিহাইডসমূহ (R-CHO) "-al" অনুসর্গটি গ্রহণ করে। যদি অন্যান্য কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকে এবং উচ্চতর অগ্রাধিকারের কার্যকরী মূলক উপস্থিত না থাকে তবে শিকলটি এমনভাবে সংখ্যায়িত করা হয় যেন অ্যালডিহাইড মূলকের কার্বনটি ১নং অবস্থানে থাকে।

যদি উপসর্গের প্রয়োজন পড়ে তবে শিকলের সমাপ্তি নির্দেশের জন্য সংখ্যাসহ (কিটোন এর মত) অক্সো উপসর্গটি ব্যবহৃত হয়: CHOCH2COOH এর নাম 3-oxopropanoic acid। যদি সংযুক্ত শিকলে কার্বনাইল মূলকের কার্বনটি অন্তর্ভুক্ত করা না যায় (উদাহরণস্বরূপ চাক্রিক অ্যালডিহাইডের ক্ষেত্রে) "formyl-" উপসর্গ কিংবা "-carbaldehyde"অনুসর্গটি ব্যবহৃত হয়: C6H11CHO এর নাম cyclohexanecarbaldehyde. যদি অ্যালডিহাইড বেনজিনের সাথে সংযুক্ত হয় এবং প্রধান কার্যকরী মূলক হয় তবে অনুসর্গটি benzaldehyde হয়।

কিটোন

[সম্পাদনা]

সাধারণভাবে কিটোনে (R-CO-R) অবস্থানসূচক সংখ্যাসহ -ওন অনুসর্গ সংযুক্ত থাকে: CH3CH2CH2COCH3 কে ডাকা হয় pentan-2-one। তবে উপসর্গের প্রয়োজনে অক্সো- ব্যবহৃত হয়: CH3CH2CH2COCH2CHO এর নাম 3-oxohexanal।

কার্বোক্সিলিক এসিড

[সম্পাদনা]

সাধারণভাবে কার্বোক্সিলিক এসিডসমূহের শেষে -oic acid উপসর্গ যুক্ত হয়ে নামকরণ করা হয় (বেনজোয়িক অ্যাসিড এর নাম থেকে নেয়)। অ্যালডিহাইডের মতো কার্বোক্সিল মূলক এর কার্বনকে ১নং ধরায় অবস্থান উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না। উদাহরণস্বরূপ CH3-CH(OH)-COOH (ল্যাকটিক অ্যাসিড) এর নাম 2-hydroxypropanoic acid। কিছু ঐতিহাসিক নাম (যেমন অ্যাসিটিক অ্যাসিড) এতটাই প্রচলিত যে তাদেরকে ইউপ্যাক নামকরণেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে,[] তবে ইথানয়িক অ্যাসিডের মতো পদ্ধতিগত নামও ব্যবহৃত হয়। বেনজিন বলয়ের সঙ্গে সংযুক্ত কার্বক্সিলিক এসিড সমূহ বেনজয়িক এসিডের (Ph-COOH) গাঠনিক এনালগ এবং এর জাতক হিসেবে নামকরণ করা হয়

সাইট্রিক এসিড

যদি একই প্রধান শিকলে একাধিক কার্বক্সিল মুলক থাকে তবে তাদের প্রত্যেকের উপসর্গ সংযুক্ত করে নামকরণ করা হয় : মেলনিক অ্যাসিড, CH
2
(COOH)
2
, এর পদ্ধতিগত নাম acid। অন্যভাবে, "-carboxylic acid" অনুসর্গেরও ব্যবহার হতে পারে ; উদাহরণস্বরূপ মেলিটিক অ্যাসিড এর নাম benzenehexacarboxylic acid। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কার্বক্সিল মূলকের কার্বনগুলো প্রধান শিকলের অংশ হিসেবে গণ্য হয় না , যা কার্বক্সি উপসর্গের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সাইট্রিক এসিড এর একটি উদাহরণ: এর আনুষ্ঠানিক নাম 3-carboxy-3-hydroxypentanedioic acid এর পরিবর্তে 2-hydroxypropane-1,2,3-tricarboxylic acid ধরা হয়।

কার্বোক্সাইলেট

[সম্পাদনা]
formule développée d'un ion carboxylate
formule développée d'un ion carboxylate

ইউপ্যাক এবং সাধারণ নামকরনে আয়নিক যৌগসমূহের নামকরণের সাধারণ রীতি অনুযায়ী কার্বক্সিলিক এসিডের লবণের নামে প্রথমে ক্যাটায়ন এবং পরে অ্যানায়ন ব্যবহৃত হয়। কার্বোএক্সাইলেটের অ্যানায়নের নাম মূল এসিডের -ওয়িক অ্যাসিড এর পরিবর্তে -ওয়েট বসিয়ে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বেনজয়িক এসিডের (C
6
H
5
COOH
) সোডিয়াম লবণ C
6
H
5
CO
2
Na
কে বলা হয় সোডিয়াম বেনজোয়েট। যেক্ষেত্রে কোন এসিড এর পদ্ধতিগত এবং সাধারণ উভয় নামই রয়েছে, সেক্ষেত্রে লবণের নাম যে কোন একটি অনুসারে হতে পারে। ফলে CH
3
CO
2
K
এর নাম পটাশিয়াম অ্যাসিটেট কিংবা পটাশিয়াম ইথানয়েট উভয়ই হতে পারে।

এস্টার

[সম্পাদনা]

এস্টারসমূহকে (R-CO-O-R') কার্বক্সিলিক এসিডের অ্যালকাইল জাতক হিসেবে নামকরণ করা হয়। প্রথমে অ্যালকাইল (R') মূলকটির নামকরণ করা হয়। তারপর R-CO-O অংশটির কার্বক্সিলিক এসিডের ভিত্তিতে ভিন্ন পদ হিসেবে নামকরণ করা হয় যার শেষে -ওয়িক অ্যাসিড এর বদলে -ওয়েট থাকে। উদাহরণস্বরূপ CH3CH2CH2CH2COOCH3 এর নামকরণ methyl pentanoate, এবং (CH3)2CHCH2CH2COOCH2CH3 এর নাম ethyl 4-methylpentanoate। সাধারণ এসিডভিত্তিক ইথাইল অ্যাসিটেট 3COOCH2CH3), ইথাইল ফরমেট (HCOOCH2CH3) অথবা ডাইমিথাইল থ্যালেটের মত ইথারের ক্ষেত্রে ইউপ্যাক কিছু প্রতিষ্ঠিত নামের প্রস্তাব দেয় যাদেরকে বলা হয় অপরিবর্তিত নাম। এক্ষেত্রে -ওয়েট -এট এ পরিণত হয়। উভয় পদ্ধতিতে নামকরণ করা যায় এমন কিছু উদাহরণ নিচের চিত্রে প্রদর্শন করা হলো:

যদি শিকলের শেষে অ্যালকাইল মূলক যুক্ত না থাকে তবে এস্টার মূলকের -আইল অনুসর্গের পূর্বে অবস্থান সূচক সংখ্যা বসে: CH3CH2CH(CH3)OOCCH2CH3 কে but-2-yl propanoate কিংবা but-2-yl propionate বলা যেতে পারে [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অ্যাসাইল মূলক

[সম্পাদনা]

সংশ্লিষ্ট কার্বক্সিলিক এসিডের -ইক এসিড এর পরিবর্তে -ইল বসিয়ে এসাইল মূলক গুলোর নামকরণ করা হয়। যেমন CH
3
CO-R
কে Ethanoyl-R বলা হয়।

অ্যাসাইল হ্যালাইড

[সম্পাদনা]

এসাইল মুলকের শেষে সাধারণভাবে হ্যালাইড মূলকটির নাম যুক্ত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ CH
3
COCl
এর নাম Ethanoyl Chloride।

এসিড অ্যানহাইড্রাইড

[সম্পাদনা]

যদি উভয় এসাইল মূলক একই হয় তবে কার্বক্সিলিক এসিডের -এসিড শব্দটির পরিবর্তে -অ্যানহাইড্রাইড বসিয়ে নামকরণ করা হয়। যদি এসাইল মূলকগুলো ভিন্ন হয়, তবে বর্ণানুক্রমিকভাবে একই পদ্ধতিতে এসিড শব্দটির পরিবর্তে অ্যানহাইড্রাইড বসিয়ে নামকরণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ -O-OCCH
3
কে Ethanoic Anhydride বলা হয়।

অ্যামিন

[সম্পাদনা]

অ্যামিনসমূহকে (R-NH2) অ্যালকেন শিকলের নামের শেষে -অ্যামিন সংযুক্ত করে নামকরণ করা হয় (অর্থাৎ CH3NH2)। প্রয়োজন অনুসারে অবস্থান সংখ্যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়: CH3CH2CH2NH2 propan-1-amine, CH3CHNH2CH3 propan-2-amine। এর উপসর্গ রূপ অ্যামিনো-

সেকেন্ডারি অ্যামিন এর ক্ষেত্রে (R-NH-R) নাইট্রোজেন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত বৃহত্তর শিকলটিকে প্রধান শিকল হিসেবে বিবেচনা করা হয়; অন্য শিকলটি বাঁকা অক্ষরে N কে অবস্থান সূচক সংখ্যা হিসেবে বসিয়ে অ্যালকাইল মূলক হিসেবে যুক্ত হয় : CH3NHCH2CH3 এর নাম N-methylethanamine। টারশিয়ারি অ্যামিন এর ক্ষেত্রেও (R-NR-R) একইভাবে নামকরণ করা হয়: CH3CH2N(CH3)CH2CH2CH3 এর নাম N-ethyl-N-methylpropanamine. প্রতিস্থাপক মূলক গুলো বর্ণানুক্রমিকভাবে বিন্যাস করা হয়।

অ্যামাইড

[সম্পাদনা]

যদি অ্যামাইড (R-CO-NH2) মূলকের কার্বন প্রধান শিকলে অন্তর্ভুক্ত না হয় তবে এটি "-amide" অথবা "-carboxamide" অনুসর্গ গ্রহণ করে। এর উপসর্গ রূপ "carboxamido-" অথবা "amido-"।

নাইট্রোজেনে প্রতিস্থাপক থাকলে তা অ্যামিন এর মত বিবেচনা করা হয় : HCON(CH3)2 এর নাম N,N-dimethylmethanamide.

নাইট্রাইল

[সম্পাদনা]

বৃহত্তম কার্বন শিকল এর শেষে -নাইট্রাইল অনুসর্গ যুক্ত করে নাইট্রাইল মূলক সমূহের নামকরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট কার্বক্সিলিক এসিড এর নামের শেষে -ওয়িক অ্যাসিড এর পরিবর্তে -ওনাইট্রাইল যুক্ত করেও নামকরণ করা যেতে পারে। অ্যালকাইল সায়ানাইড কে ইউপ্যাক নামকরণ পদ্ধতির একটি কার্যকরী মূলক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ CH
3
CH
2
CH
2
CH
2
CN
কে pentanenitrile অথবা butyl cyanide বলা হয়।

চাক্রিক যৌগ

[সম্পাদনা]

সাইক্লোঅ্যালকেনসমূহ এবংঅ্যারোমেটিক যৌগসমূহকে প্রধান শিকল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে যে ক্ষেত্রে বলয় গঠনের সাপেক্ষে প্রতিস্থাপক গুলোর অবস্থান কে সংখ্যায়িত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জাইলিনের তিনটি সমাণু CH3C6H4CH3 (সাধারণভাবে ortho-, meta-, এবং para- আকারের) হলো 1,2-dimethylbenzene, 1,3-dimethylbenzene, এবং 1,4-dimethylbenzene। চক্রীয় কাঠামোগুলোকে কার্যকরী মূলক হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তারা "cycloalkyl-" (উদাহরণস্বরূপ "cyclohexyl-") অথবা বেনজিনের ক্ষেত্রে "phenyl-" উপসর্গ গ্রহণ করতে পারে।

সহচক্রীয় বলয় এবং বিভিন্ন নাম যেমন ফেনল সহ বিভিন্ন জটিল চক্রীয় যৌগের জন্য ইউপ্যাক বিভিন্ন নামকরণ বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করে। এক্ষেত্রে কখনো কখনো ফেনলকে ভিত্তি ধরে চক্রিয় কাঠামো সমূহের নামকরণ করা হয়।

সক্রিয়তা ক্রম

[সম্পাদনা]

যখন কোনো যৌগে একাধিক কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকে তখন প্রাধান্যতার ক্রম নির্ধারণ করে কোন মূলকটি উপসর্গ কিংবা অনুসর্গ রূপে বসবে। নিচের সারণিতে কিছু সাধারন মূলকের প্রাধান্যতা অবরোহী ক্রমানুসারে দেয়া হলো। শুধুমাত্র সর্বোচ্চ-প্রাধান্যপ্রাপ্ত মূলকটি অনুসর্গরূপে থাকে এবং বাকিগুলো উপসর্গ রূপে ব্যবহৃত হয়। তবে দ্বিবন্ধন এবং ত্রিবন্ধন সর্বদাই অনুসর্গ রূপে ব্যবহৃত হয়।

উপসর্গ ব্যবহৃত প্রতিস্থাপক মূলক গুলো বর্ণানুক্রমিকভাবে বিন্যস্ত করা হয়। যদি একই ধরনের একাধিক কার্যকরী মূলক থাকে, তবে তাদের অবস্থাসূচক সংখ্যাকে সাংখ্যিকভাবে বিন্যস্ত করা হয়। অ্যামিন এবং অ্যামাইডের N অবস্থান নির্দেশকটি "১" এর পূর্বে বসে; যেমন CH
3
CH(CH
3
)CH
2
NH(CH
3
)
এর নাম N,২-ডাইমিথাইলপ্রোপান্যামিন।

প্রাধান্য কার্যকরী মূলক সংকেত উপসর্গ অনুসর্গ
ক্যাটায়নসমূহ
   যেমন- অ্যামোনিয়াম
 
NH4+
-ওনিও-
অ্যামোনিও-
-ওনিয়াম
-অ্যামোনিয়াম
কার্বক্সিলিক অ্যাসিডসমূহ
কার্বোথাইওইক S-অ্যাসিডসমূহ
কার্বোসেলেনোইক Se-অ্যাসিডসমূহ
সালফোনিক অ্যাসিড
সালফিনিক অ্যাসিডসমূহ
–COOH
–COSH
–COSeH
–SO3H
–SO2H
কার্বোক্সি-
সালফানাইলকার্বনিল-
সেলানাইলকার্বনিল-
সালফো-
সালফিনো-
-ওইক অ্যাসিড*
-থাইওইক S-অ্যাসিড*
-সেলানোইক Se-অ্যাসিড*
-সালফোনিক অ্যাসিড
-সালফিনিকি অ্যাসিড
কার্বক্সিলিক অ্যাসিডের জাতকসমূহ
এস্টারসমূহ
অ্যাসাইল হ্যালাইডসমূহ
অ্যামাইডসমূহ
ইমাইডসমূহ
অ্যামাইডিনসমূহ
 
–COOR
–COX
–CONH2
–CON=C<
–C(=NH)NH2
 
R-অক্সিকার্বনিল-
হ্যালোকার্বনিল-
কার্বামোইল-/অ্যামাইডো-
-ইমাইডো-
অ্যামাইডিনো-
 
-R-অয়েট
-ওইল হ্যালাইড*
-অ্যামাইড*
-ইমাইড*
-অ্যামাইডিন*
নাইট্রাইলসমূহ
   আইসোসায়ানাইডসমূহ
–CN
–NC
সায়ানো-
আইসোসায়ানো-
-নাইট্রাইল*
আইসোসায়ানাইড
অ্যালডিহাইডসমূহ
   থায়োঅ্যালডিহাইডসমূহ
–CHO
–CHS
ফর্মাইল-
থায়োফর্মাইল-
-অ্যাল*
-থায়্যাল*
কিটোনসমূহ
থায়োকিটোনসমূহ
সিলোনসমূহ
=O
=S
=Se
=Te
অক্সো-
সালফানাইলিডিন-
সেলানাইলিডিন-
টেলানাইলিডিন-
-ওন
-থায়োন
-সেলোন
-টেলোন
অ্যালকোহলসমূহ
থায়লসমূহ
সেলিনলসমূহ
টেলুরলসমূহ
–OH
–SH
–SeH
–TeH
হাইড্রোক্সি-
সালফানাইল-/মার্ক্যাপ্টো-
সেলানাইল-
টেলানাইল-
-অল
-থায়ল
-সেলিনল
-টেলুরক
হাইড্রোপারঅক্সাইডসমূহ
পারঅক্সলসমূহ
থায়োপারঅক্সলসমূহ (সালফেনিক অ্যাসিড)
ডাইথায়োপারঅক্সল

-OOH
-SOH
-SSH

হাইড্রোপারঅক্সি-
হাইড্রোক্সিসালফানাইল-
ডাইসালফানাইল-

-পারঅক্সল
-SO-থায়োপারঅক্সল
-ডাইথায়োপারঅক্সল
অ্যামিনসমূহ
   ইমিনসমূহ
   হাইড্রাজিনসমূহ
–NH2
=NH
–NHNH2
অ্যামাইনো-
ইমাইনো-
হাইড্রাজিনো-
-অ্যামিন
-ইমিন
-হাইড্রাজিন

*বি.দ্র.:কার্বন পরমাণু পূর্ববর্তী শিকলের অংশ হিসাবে বিবেচনা করা এই অনুসর্গগুলি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। আরও বিস্তারিত জানার জন্য পৃথকভাবে কার্যকরী মূলক নিবন্ধ দেখুন।

অবশিষ্ট কার্যকরী মূলকের ক্রম শুধুমাত্র প্রতিস্থাপিত বেনজিনের জন্য প্রয়োজনীয় এবং তাই এখানে উল্লেখ করা হয় নি।

সাধারণ নামকরণ – প্রচলিত নাম

[সম্পাদনা]

সাধারণ নামকরণ উপরের কার্বন গঠনের উপসর্গ ব্যবহার না করে কিছু জৈব যৌগের জন্য পুরানো নাম ব্যবহার করে। কিছু বিন্যাস নিচে দেয়া হলঃ

কার্বনসংখ্যা নতুন পদ্ধতিতে
উপসর্গ
অ্যালকোহলের
প্রচলিত নাম
অ্যালডিহাইডের
প্রচলিত নাম
অ্যাসিডের
প্রচলিত নাম
কিটোনের
প্রচলিত নাম
1Meth-Methyl alcohol
(wood alcohol)
FormaldehydeFormic acid NA
2Eth-Ethyl alcohol
(grain alcohol)
AcetaldehydeAcetic acid(vinegar) NA
3Prop-Propyl alcoholPropionaldehydePropionic acid Acetone/dimethyl ketone
4But-Butyl alcoholButyraldehydeButyric acid Ethyl methyl ketone
5Pent-Amyl alcoholValeraldehydeValeric acid •Methyl propyl ketone

•Diethyl ketone

6Hex-Caproyl alcoholCaproaldehydeCaproic acid •Butyl methyl ketone

•Ethyl propyl ketone

7Hept-Enanthyl alcoholEnanthaldehydeEnanthoic acid •Methyl pentyl ketone

•Butyl Ethyl ketone

•Dipropyl ketone

8Oct-Capryl alcoholCaprylaldehydeCaprylic acid •Hexyl methyl ketone

•Ethyl pentyl ketone

•Butyl propyl ketone

9Non-Pelargonic alcoholPelargonaldehydePelargonic acid •Heptyl methyl ketone

•Ethyl hexyl ketone

•Pentyl propyl ketone

•Dibutyl ketone

10Dec-Capric alcoholCapraldehydeCapric acid •Methyl octyl ketone

•Ethyl heptyl ketone

•Hexyl propyl ketone

•Butyl pentyl ketone

11Undec----

নিচের বিন্যাস অনুযায়ী

12Dodec-Lauryl alcoholLauraldehydeLauric acid
13Tridec----
14Tetradec-Myristyl alcoholMyristaldehydeMyristic acid
15Pentadec----
16Hexadec-Cetyl alcohol
Palmityl alcohol
PalmitaldehydePalmitic acid
17Heptadec---Margaric acid
18Octadec-Stearyl alcoholStearaldehydeStearic acid
19Nonadec----
20Eicos-Arachidyl alcohol-Arachidic acid
21Henicos----
22Docos-Behenyl alcohol-Behenic acid
23Tricos----
24Tetracos-Lignoceryl alcohol-Lignoceric acid
25Pentacos----
26Hexacos-Ceryl alcohol-Cerotic acid
27Heptacos----
28Octacos-Montanyl alcohol-Montanic acid
29Nonacos----
30Triacont-Melissyl alcohol-Melissic acid
31Hentriacont----
32Dotriacont-Lacceryl alcohol-Lacceroic acid
33Tritriacont-Psyllic alcohol-Psyllic acid
34Tetratriacont-Geddyl alcohol-Geddic acid
35Pentatriacont---Ceroplastic acid
36Hexatriacont----
37Heptatriacont----
38Octatriacont----
39Nonatriacont----
40Tetracont----

কিটোন ২

[সম্পাদনা]

কিটোন এর সাধারণ নাম কার্বনাইল মূলকের সঙ্গে বন্ধনযুক্ত দুটো অ্যালকাইল বা অ্যারাইল মূলকের নামের শেষে কিটোন যুক্ত করে গ্রহণ করা যেতে পারে।

উপরের দেখানো প্রথম তিনটি নাম এখনো ইউপ্যাক কর্তৃক গৃহীত নাম

অ্যালডিহাইড

[সম্পাদনা]

সংশ্লিষ্ট কার্বক্সিলিক এসিড এর নামের শেষে -ইক এসিড কিংবা -ওয়িক অ্যাসিড এর পরিবর্তে -অ্যালডিহাইড যুক্ত করে অ্যালডিহাইডের সাধারণ নাম পাওয়া যেতে পারে।

আয়নসমূহ

[সম্পাদনা]

আইইউপিএসি আয়নসমূহের নামকরণের নীতিমালাও প্রণয়ন করেছে।

হাইড্রন

[সম্পাদনা]

হাইড্রন হলো হাইড্রোজেন ক্যাটায়নসমূহের সাধারণ নাম; প্রোটন, ডিওটেরন, ট্রিটিয়ন—সবই হাইড্রন। তবে ভারী আইসোটোপসমূহে হাইড্রন দেখা যায় না।

প্রধান হাইড্রাইড ক্যাটায়ন

[সম্পাদনা]

একটি হাইড্রনে হ্যালোজেন, চালকোজেন অথবা নিক্টোজেনের একটি হাইড্রাইড যুক্ত করে প্রাপ্ত সাধারণ ক্যাটায়নগুলোর ক্ষেত্রে মৌলের শেষে -ওনিয়াম অনুসর্গ যোগ করে নামকরণ করা হয়: H4N+ হলো অ্যামোনিয়াম, H3O+ হল অক্সোনিয়াম, এবং H2F+ এর নাম ফ্লোরোনিয়াম। নাইট্রোনিয়ামের (যা বর্তমানে NO2+-কে নির্দেশ করে) পরিবর্তে অ্যামোনিয়াম কে গ্রহণ করা হয়েছে।

যদি হাইড্রাইডের কেন্দ্রে কোনো হ্যালোজেন, চালকোজেন কিংবা নিক্টোজেন না থাকে, তবে নিরপেক্ষ হাইড্রাইডের সঙ্গে -ইয়াম অনুসর্গ যুক্ত করে নামকরণ করা হয়: H5C+ এর নাম মিথেনিয়াম, HO-(O+)-H2 হলো ডাইঅক্সাইডেনিয়াম (HO-OH হলো ডাইঅক্সাইডেন), এবং H2N-(N+)-H3 হলো ডায়াজেনিয়াম (H2N-NH2 এর নাম ডায়াজেন)।

ক্যাটায়ন ও প্রতিস্থাপন

[সম্পাদনা]

মিথানিয়াম ব্যতীত উপর্যুক্ত ক্যাটায়নসমূহ কার্বন না থাকায় জৈব যৌগ নয়। তবে হাইড্রোজেনের এর পরিবর্তে অন্য কোন মৌল কিংবা কার্যকরী মূলক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে অনেক জৈব ক্যাটায়ন পাওয়া যায়।

প্রত্যেকটি প্রতিস্থাপনের নাম হাইড্রাইড ক্যাটায়ন এর পূর্বে উপসর্গরূপে যুক্ত হয়। যদি একই কার্যকরী মূলক একাধিকবার প্রতিস্থাপন করে তবে হ্যালোজেনেশন এর মত ডাই ট্রাই ইত্যাদি উপসর্গ ব্যবহৃত হয়: (CH3)3O+ হলো ট্রাইমিথাইলঅক্সোনিয়াম, CH3F3N+ এর নাম ট্রাইফ্লোরোমিথাইল্যামিনিয়াম।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. International Union of Pure and Applied Chemistry. Commission on the Nomenclature of Organic Chemistry. (১৯৭১)। Nomenclature of organic chemistry ...। International Union of Pure and Applied Chemistry. ([New ed.] সংস্করণ)। London,: Butterworths। আইএসবিএন ০৪০৮৭০১৪৪৭ওসিএলসি 2656754{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত বিরামচিহ্ন (লিঙ্ক)
  2. Nomanclature of Inorganic Chemistry
  3. "Ethers"www.chem.ucalgary.ca। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৯
  4. International Union of Pure and Applied Chemistry Organic Chemistry Division Commission on Nomenclature of Organic Chemistry (১৯৯৫)। "Table 28(a): Carboxylic acids and related group"। Panico, Robert; Powell, Warren H.; Richer, Jean-Claude (সম্পাদকগণ)। A Guide to IUPAC Nomenclature of Organic Compounds: Recommendations 1993 (including revisions, published and hitherto unpublished, to the 1979 edition of Nomenclature of Organic Chemistry) (2nd সংস্করণ)। Oxford: Blackwell Scientific Publicationsআইএসবিএন ৯৭৮০৬৩২০৩৪৮৮৮

বহির্পঠন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]