বিষয়বস্তুতে চলুন

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও ইনস্টিটিউটসমূহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মূর‍্যাল কম্পলেক্স থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে: গোবিপ্রবি, পূর্বে: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) বাংলাদেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। ২০০১ সালের ৮ জুলাই, জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণীত হয়। ২০০১ সালের ১৩ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধীনে ৩৩টি বিভাগ এবং ৩টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ থেকে পরিবর্তন করে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে।[]

অনুষদসমূহ

[সম্পাদনা]

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি অনুষদের অধীনে মোট ৩৩টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।

প্রকৌশল অনুষদ

[সম্পাদনা]

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৃহৎ এই অনুষদটি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং২০১১
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং২০১২
অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং২০১২
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং২০১৭[]
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং২০১৭
আর্কিটেকচার২০১৮[]

প্রকৌশল অনুষদ হলোগোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন চারটি অনুষদের মধ্যে অন্যতম। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এই অনুষদের অধীনে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) এবং ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগ চালুর মাধ্যমে এর একাডেমিক যাত্রা শুরু হয়।

পরবর্তী ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে অনুষদটির আরও সম্প্রসারণ ঘটে এবং নতুন দুটি বিভাগ—তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক প্রকৌশল (ইইই) এবং ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল চালু করা হয়। এই অনুষদের অধীনে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং চলমান ছিল। এটি চালুর পর থেকেই বিভাগটির শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকুরির বিজ্ঞপ্তি, বিশেষ করে পাওয়ার সেক্টরে, আবেদন করার ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছিলেন। এর ফলে, তারা ইইই বিভাগের সাথে একীভূতকরণের দাবিতে ২০১৯ সালে আন্দোলন ও অনশন করেন।[]

এই প্রেক্ষাপটে এবং বিভিন্ন জটিলতা নিরসনে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ১৬ জুন এক অফিস আদেশের মাধ্যমে ইটিই বিভাগটি বিলুপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিভাগের শিক্ষকদের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। বিদ্যমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ হলে বিভাগটি চূড়ান্তভাবে বিলুপ্ত হিসেবে গণ্য হবে।

এদিকে, অনুষদটির পরিসর আরও বৃদ্ধি পায় ২০১৭ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ২০১৮ সালে স্থাপত্যফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালুর মাধ্যমে।[]

বিজ্ঞান অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
গণিত২০১১
পরিসংখ্যান২০১২
রসায়ন২০১৬
পদার্থবিজ্ঞান২০১১
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা২০১৬

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন চারটি অনুষদের মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদ অন্যতম। ২০১৫ সালের ১৭ জুন, অনুষদের নতুন ডিন হিসেবে গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দিপংকর কুমার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।[]

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষেই এই অনুষদের অধীনে দুটি বিভাগ নিয়ে এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে গণিত বিভাগটি অন্যতম পথিকৃৎ বিভাগ, যেখানে বর্তমানে ১৫ জনের অধিক শিক্ষক এবং প্রায় ২৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। [] বিভাগটি শিক্ষার্থীদের জন্য গণিত অলিম্পিয়াড, গবেষণা এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরের মতো কার্যক্রম আয়োজন করে থাকে। এখানকার গবেষণার প্রধান ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্লুইড ডাইনামিক্স, ম্যাথেমেটিক্যাল মডেলিং এবং ওয়েভলেট অ্যানালাইসিস। একই শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি রয়েছে যা উন্নত গবেষণায় সহায়ক।

পরবর্তী ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে অনুষদটিতে পরিসংখ্যান বিভাগ যুক্ত হয়। এরপর ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে আরও দুটি নতুন বিভাগ চালু হয়—রসায়ন এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। রসায়ন বিভাগটিও আধুনিক শিক্ষণ ও গবেষণা সুবিধা দিয়ে সজ্জিত। অন্যদিকে, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগটি জলবিজ্ঞান (Hydrogeology), জিআইএস (GIS), বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ক্লাইমেট মডেলিং-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনা করে।

জীববিজ্ঞান অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
ফার্মেসি২০১২
বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং২০১৫
বায়োকেমিস্ট্রি এবং মলিকুলার বায়োলজি২০১৫
মনোবিজ্ঞান২০১৭
উদ্ভিদবিজ্ঞান২০১৮

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে জীববিজ্ঞান অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। অনুষদটির ডিনের দায়িত্বে আছেন বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ হাসিবুর রহমান। এই অনুষদের প্রথম বিভাগ ফার্মেসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) এবং বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগ দুটি যুক্ত হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে মনোবিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়, যা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সেমিনার আয়োজন করে থাকে। অনুষদের সর্বশেষ সংযোজন হলো উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, যা ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর অধীনে একটি হার্বেরিয়াম ও বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস২০১৩-২০১৪
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ২০১১
মার্কেটিং২০১৫
ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং২০১৭
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট২০১৭

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন অনুষদগুলোর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ (তৎকালীন নাম: ব্যবসা অধ্যয়ন অনুষদ) অন্যতম। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে অনুষদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে অনুষদটির ডিন হিসেবে সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ সোলাইমান হোসাইন দায়িত্ব পালন করছেন।[]

এই অনুষদের পথচলা ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগকে নিয়ে শুরু হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগ যুক্ত হয়। সময়ের সাথে সাথে অনুষদের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হয়। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে মার্কেটিং এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট (টিএইচএম) বিভাগ চালু হয়। বিশেষ করে, টিএইচএম বিভাগটি শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে, যার অংশ হিসেবে তারা বিভিন্ন পর্যটন মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে এই পাঁচটি বিভাগের সমন্বয়ে অনুষদটি ব্যবস্থাপনা, অ্যাকাউন্টিং থেকে শুরু করে পর্যটনের মতো বিশেষায়িত ক্ষেত্রে পাঠদান ও গবেষণা পরিচালনা করছে।

মানবিক অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
ইংরেজি২০১১-২০১২
বাংলা২০১৩-২০১৪
ইতিহাস২০১৭-২০১৮

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন চারটি অনুষদের মধ্যে মানবিক অনুষদ অন্যতম। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এই অনুষদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষাবর্ষেই ইংরেজি বিভাগ চালুর মাধ্যমে এই অনুষদের পথচলা শুরু হয়। ইংরেজি বিভাগ একাডেমিক ভবনের ৫ম তলায় অবস্থিত।

দুই বছর পর, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে, অনুষদে বাংলা বিভাগ যুক্ত হয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণা ও চর্চাকে এগিয়ে নিতে বিভাগটি কাজ করছে এবং শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাংলা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত। অনুষদের সর্বশেষ সংযোজন হলো ইতিহাস বিভাগ, যা ২০১৭-১৮[] শিক্ষাবর্ষে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার শুরুতে বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতার মুখোমুখি হয়েছিল, যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনও করেন।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
অর্থনীতি২০১২
সমাজবিজ্ঞান২০১২
লোকপ্রশাসন২০১৩
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক২০১৫
রাষ্ট্রবিজ্ঞান২০১৭

২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে অর্থনীতি বিভাগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ যাত্রা শুরু করে। অর্থনীতি বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের আট তলায় অবস্থিত।

পরবর্তী বছর, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে, অনুষদে লোকপ্রশাসন বিভাগ যুক্ত হয়, যা প্রশাসন ও সুশাসন বিষয়ে পাঠদানকে সমৃদ্ধ করে। একাডেমিক ভবনের ৮ম তলায় অর্থনীতি বিভাগ অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে লোকপ্রশাসন বিভাগ ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ অবস্থিত।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ একাডেমিক ভবনের ৫ম ও ৮ম তলায় অবস্থিত। বিভাগটির দাপ্তরিক কার্যালয়, একটি সেমিনার লাইব্রেরি এবং একটি শ্রেণীকক্ষ ৫ম তলায় রয়েছে। এছাড়াও, ৮ম তলায় বিভাগটির শিক্ষার্থীদের জন্য আরও দুইটি শ্রেণীকক্ষ বরাদ্দ আছে। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা উদ্দিন বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পাশে ৫ম তলায় অবস্থিত।

এই অনুষদের প্রতি বিভাগে প্রতি বছর ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অনুষদ।

আইন অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
আইন২০১৫

২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। আইন অনুষদের অধীনে শুধুমাত্র আইন বিভাগ রয়েছে। প্রতিবছর ৫০ জন শিক্ষার্থী আইন বিভাগে ভর্তির সুযোগ লাভ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সপ্তমতলায় আইন অনুষদ অবস্থিত।

কৃষি অনুষদ

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
কৃষি২০১৫
ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স২০১৭

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে কৃষি অনুষদের যাত্রা শুরু হয়। এই অনুষদের প্রথম বিভাগ হিসেবে কৃষি বিভাগ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে।

পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে অনুষদটিতে আরও দুটি বিভাগ যুক্ত হয়: ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স এবং এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন। প এই বিভাগগুলো চালুর মাধ্যমে অনুষদের পাঠ্যক্রমে মৎস্য ও সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান এবং পশুসম্পদ ও প্রাণীচিকিৎসা বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০২৫ সালের নভেম্বরে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন নামে নতুন অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হলে এই বিভাগ নতুন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে এই দুইটি বিভাগের অধীনে অনুষদটি কৃষি, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন

[সম্পাদনা]
বিভাগের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন২০১৭

২০১৭ সালে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের যাত্রা শুরু হয় কৃষি অনুষদেএ অধীনে। ২০২৫ সালের ২৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ৩৬তম একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন নামে একটি স্বতন্ত্র অনুষদ খোলার বিষয়টি একই বছর ৩ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ৪১তম রিজেন্ট বোর্ডের ৪১/২ সিদ্ধান্তে অনুমোদিত হয়। ১৭ নভেম্বর অফিস আদেশের মাধ্যমে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন হিসেবে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুব হাসানকে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।[]

ইনস্টিটিউটসমূহ

[সম্পাদনা]
ইনস্টিটিউটের নামপ্রতিষ্ঠাকাল
ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ২০১৩-২০১৪
কৃষি ইনস্টিটিউট-
আইসিটি ইনস্টিটিউট২০১৮

অনুষদের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার জন্য তিনটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষণার জন্য দেশের প্রথম বিশেষায়িত এই ইনস্টিটিউটটি ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে যাত্রা শুরু করে।[] ইনস্টিটিউটটি এম.ফিল এবং পিএইচ.ডি পর্যায়ে উচ্চতর গবেষণার সুযোগ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সেমিনার ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অফ লিবারেশন ওয়ার অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজকে ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ নামে পরিবর্তন করা হয়।

কৃষি ইনস্টিটিউট

[সম্পাদনা]

কৃষি অনুষদের বিভাগগুলোকে একত্রিত করে "শেখ হাসিনা কৃষি ইনস্টিটিউট" প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তী ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে এটির নাম কৃষি ইন্সটিটিউট হিসেবে পরিবর্তন করা হয়। মূলত দেশের কৃষি বিষয়ক শিক্ষাকে আরও আধুনিক ও গবেষণানির্ভর করার লক্ষ্যে এই ইনস্টিটিউটটি গঠন করা হয়েছে। এর অধীনে বর্তমানে তিনটি বিভাগ রয়েছে: কৃষি, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স এবং এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন। এই ইনস্টিটিউটটি ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে এবং শিক্ষার্থীদের মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় উৎসাহিত করে।

আইসিটি ইনস্টিটিউট

[সম্পাদনা]

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই "শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউট"-এর অনুমোদন দেওয়া হয়।[১০] প্রকৌশল অনুষদের তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে এই ইনস্টিটিউটের অধীনে আনা হয়েছে। এর মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ রয়েছে। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে এটির নাম আইসিটি ইন্সটিটিউট হিসেবে পরিবর্তন করা হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "পরিবর্তন হলো শেখ পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  2. 1 2 "বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ৮টি বিভাগ"বাংলা ট্রিবিউন। ২০ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫
  3. "Department of Architecture, BSMRSTU"gstu.edu.bd। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫
  4. "ETE students of BSMRSTU demand merger of their department with EEE"ঢাকা ট্রিবিউন। ১৪ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫
  5. "বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ নং- বশেমুরবিপ্রবি/র/জ.প্র/০৮/৮৯(১২)" (পিডিএফ)। ১৬ জুন ২০২১। ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫
  6. 1 2 "গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত|1134277| Bangladesh Pratidin"www.bd-pratidin.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫
  7. "Home-Department of Mathematics -BSMRSTU"www.gstu.edu.bd। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫
  8. ১৭ নভেম্বর অফিস আদেশ (পিডিএফ], গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সংগ্রহীত ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
  9. "বশেমুরবিপ্রবি: অবহেলায় ধুঁকছে বঙ্গবন্ধুর নামে গড়া উচ্চ শিক্ষার একমাত্র ইনস্টিটিউট"দৈনিক ইত্তেফাক। ২০ জুলাই ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২৫
  10. "বশেমুরবিপ্রবিতে নতুন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট"jjdin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫