বিষয়বস্তুতে চলুন

মিল্কভিটা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মিল্কভিটা
মিল্কভিটার সিলমোহর
গঠিত১৯৭৩
সদরদপ্তরঢাকা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে কাজ করে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান
অধ্যাপক আবু সাইয়িদ
প্রধান প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড
ওয়েবসাইটmilkvita.portal.gov.bd

মিল্কভিটা হলো বাংলাদেশের সরকারি দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এর মালিক “বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড”, যা বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক পরিচালিত একটি সমবায় সমিতি।[] কোম্পানিটির মূল উদ্দেশ্য হল দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য সামগ্রী উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভূমিহীন দুগ্ধ উৎপাদনকারী কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা।[] ২০২১ সালে, মিল্কভিটার অধীনে বাংলাদেশের তরল দুধের ৪০ শতাংশ বাজার দখলে রয়েছে।[][] বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগে কোম্পানিটির কারখানা রয়েছে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৯৭৩ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউ এন ডি পি) ও  ডেনমার্কের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এজেন্সী (ডানিডা )-এর সহযোগিতায় এদেশের দুগ্ধ নিয়ে নিয়ে স্টাডি করানো  হয় ।  তারা ভারতের  ''আমূল'' পদ্ধতি গ্রহণের সুপারিশ করে

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার “সমবায় দুগ্ধ প্রকল্প” নামে একটি দুগ্ধশিল্প উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করে।[] দুগ্ধ উৎপাদনকারী কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারের ১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা ঋণ সহায়তায় দেশের পাঁচটি এলাকায় দুগ্ধ কারখানা স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে “বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড” (মিল্কভিটা) নামে এর নামকরণ করা হয়।

১৯৭৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারী তৎকালীন পাবনা জেলার (বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার) বাঘাবাড়ি ঘাটে মিল্কভিটার সর্ববৃহৎ প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী।

২০২২ সালে, আইসক্রিম পণ্যে বাজারের অংশীদারত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে মিল্কভিটা মাদারীপুরে আইসক্রিম কারখানা তৈরির আবেদন করে।[]

এর মূল পণ্য হল তরল দুধ, যা “মিল্কভিটা” নামে বিক্রয় করা হয়। তরল দুধের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ঘি, মাখন, আইসক্রিম, মিষ্টি দই, টক দই, ক্রিম, চকলেট ও লবঙ্গ বিক্রি করে।

মান ও নিরাপত্তা

[সম্পাদনা]

২০১৯ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ পাস্তুরিত দুধের মান পরীক্ষায় উদ্বেগজনক ফলাফল প্রকাশ করে। পরীক্ষায় প্রাণ, মিল্কভিটা, এবং আড়ংসহ বাজারে বিক্রি হওয়া সাতটি পাস্তুরিত দুধের নমুনা মানহীন প্রমাণিত হয়। এগুলোর মধ্যে কিছুতে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এবং কিছুতে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়। একইসাথে, কাঙ্ক্ষিতমাত্রার ‘সলিড নট ফ্যাট’ও কোনো নমুনাতেই পাওয়া যায়নি।[][]

পরীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয় যে বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ভোজ্যতেল, ফলের পানীয় এবং ঘিও মানহীন প্রমাণিত হয়েছে। ফ্রুট ড্রিংকসের ১১টি নমুনার সবগুলোতেই নিষিদ্ধ সাইক্লামেট পাওয়া যায়। এছাড়া আড়ং, বাঘাবাড়ি, প্রাণ, মিল্কভিটা এবং অন্যান্য কোম্পানির ঘি মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে।[]

এই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ হাইকোর্ট ১৪টি দুগ্ধ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে, বাংলাদেশ মান নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষণ প্রতিষ্ঠান (BSTI)-এর পরীক্ষায় এসব দুধে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি অস্বীকার করা হয় এবং আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "মিল্ক ভিটা"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন ৯৮৪৩২০৫৯০১ওসিএলসি 883871743ওএল 30677644M
  2. "আমাদের লক্ষ্য" (পিডিএফ)মিল্কভিটা। বাংলাদেশ সরকার। ২৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৭
  3. 1 2 মলি, জেসমিন (১৬ ডিসেম্বর ২০১৬)। "পুষ্টিহীনতা দূরীকরণের অভিপ্রায় মিল্ক ভিটার"বণিক বার্তা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৭[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Corporatisation of dairy in Bangladesh"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ১ জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২৪
  5. "Milk Vita eyes a bigger share in ice-cream market"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২৪
  6. "প্রাণ, মিল্কভিটা, আড়ংসহ বাজারে বিক্রি হওয়া পাস্তুরিত ৭টি দুধ মানহীন"। যমুনা টিভি। ১৩ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
  7. "আড়ং, ইগলু, মিল্কভিটা, প্রাণসহ সাত দুধে ক্ষতিকর"। ইত্তেফাক। ১৩ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
  8. "১১ কোম্পানির দুধে সীসা পেল সরকারি প্রতিষ্ঠান"। ডয়চে ভেলে। ১৪ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
  9. "SC lifts ban on Milk Vita"। Daily Naya Diganta। ১১ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২৫

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]