ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
| ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় | |
|---|---|
প্রধান ফটক | |
| অবস্থান | |
![]() | |
ভি, জে, স্কুল রোড, চুয়াডাঙ্গা সদর , | |
| স্থানাঙ্ক | ২৩°৩৮′৪১″ উত্তর ৮৮°৫০′৩৭″ পূর্ব / ২৩.৬৪৪৭২° উত্তর ৮৮.৮৪৩৬১° পূর্ব |
| তথ্য | |
| প্রাক্তন নাম |
|
| ধরন | উচ্চ বিদ্যালয় সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় (সরকারি) |
| নীতিবাক্য | এসো সুন্দর হই |
| প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৮০[১] |
| প্রতিষ্ঠাতা | আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দার |
| বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর[২][১] |
| বিদ্যালয় জেলা |
|
| ইআইআইএন | ১১৫৩৪৯[২][৩][১] |
| সভাপতি | মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম |
| প্রধান শিক্ষক | মোছাঃ জেসমিন আরা খাতুন (ভারপ্রাপ্ত) |
| শিক্ষকমণ্ডলী | ৫৩ |
| শ্রেণি | ৩য় - ১০ম (পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি)[৪][৩] |
| লিঙ্গ | বালক |
| শিক্ষার্থী সংখ্যা | আনু. ২৩০০ |
| রং | সাদা শার্ট এবং নীল প্যান্ট |
| ডাকনাম | ভিজেজিএইচএস |
| জমির পরিমাণ | ৬.৭২ একর (খেলার মাঠ ব্যতীত)[১] |
| ওয়েবসাইট | vjghs |
ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (সংক্ষেপে ভি. জে. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়।[৫] ১৮৮০ সালে এই বিদ্যালয়টি চুয়াডাঙ্গার বিদ্যোৎসাহী জমিদার আবুল হোসেন জোয়ার্দার কর্তৃক চুয়াডাঙ্গা সদরে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় বিদ্যালয়ের নাম ছিল এস,ই,স্কুল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদ্যালয়টিতে মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিং দেওয়া হতো। বিদ্যালয়টি চুয়াডাঙ্গা জেলার মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। ২০১১ সালে স্কুলটির শ্রেণীর কার্যক্রম প্রভাতী ও দিবা এই দুই শিফটে বিভক্ত হয়। স্কুলটিতে ৩য় থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা দেয়া হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]স্থানীয় বিদ্যোৎসাহী জমিদার আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দার ১৮৮০ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার সময় এই বিদ্যালয়ের নাম রাখা হয় এস.ই.স্কুল।[১] পরবর্তীতে এটিকে এইচ.ই.স্কুলে নামান্তর করা হয়। জোয়ার্দ্দার বিদ্যালয়ের জন্য সাত একর জমি দান করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। প্রচলিত যে, "জ্ঞানের আলো জ্বালাতে হেথায় সকলের ঘরে ঘরে আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দার বিদ্যালয় গড়েন চুয়াডাঙ্গা শহরে"। শুরুর দিকে কারা আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দারের সহকর্মী ছিলেন এবং কতজন ছাত্র নিয়ে বিদ্যালয়টি চালু হয়েছিল তা অজানা।[৬]
আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দারের পরবর্তীতে জনাব মন্মথনাথ গুই এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৮৮৭ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারী তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাণী ভিক্টোরিয়ার শাসনের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে এই বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় ভিক্টোরিয়া জুবিলি এইচ,ই,স্কুল (সংক্ষেপে ভি, জে, এইচ,ই,স্কুল)। একই উপলক্ষে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই শহরেও একটি ভি,জে হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৬]
বিদ্যালয়তে প্রথমে টিনের ঘরে পাঠদান শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯২৮ সালে পাকা দালান নির্মাণ করা হয়। ১৯৭০ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হয়।[৬][১] তখন থেকে এই বিদ্যালয়ের নামের সাথে সরকারি যুক্ত করা হয় অর্থাৎ ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (সংক্ষেপে ভি, জে, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়)।
বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ চুয়াডাঙ্গা করেছিল। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর শিক্ষা বোর্ড (যশোর শিক্ষা বোর্ড[১]) অধীনে সংঘটিত সকল ধরনের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করে।[৭] অধিক ছাত্রদের বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ২০১১ সালে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম দুইটি শিফটে রুপান্তর করা হয়।[৬] বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়ের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ সবার মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠলে সবক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা হতো। তবে ২০২২ সালের ৩০ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (সংক্ষেপে মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৪টি নির্দেশনা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার না করে পুর্ণ নাম ব্যবহারের নির্দেশ দিলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বিলাল হোসেন ৩ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সকল গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিদ্যালয়ের পূর্ণ নাম ও প্রতিষ্ঠাকাল লেখার কাজ সমাপ্ত করেন। তারপরও স্থানীয়রা বিদ্যালয়টিকে ভি,জে, স্কুল বলে সম্বোধন করে।
অবকাঠামো
[সম্পাদনা]ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি মাঠ রয়েছে একটি বিদ্যালয়ের ভিতরে অপরটি বিদ্যালয়ের বাইরে। বিদ্যালয়ে স্থাপনা বলতে রয়েছে: একটি চারতলা, একটি তিনতলা, পাঁচটি দুইতলা ভবন যার মধ্যে দুইটি ছাত্রাবাস এবং একাধিক একতলা বিশিষ্ট ভবন। এছাড়া বিদ্যালয়ে দুইটি সাইকেল গ্যারেজ, একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজ, একটি দ্বিতল মসজিদ, একটি বিশুদ্ধ পানির প্লান্ট[৮] এবং একটি স্থায়ী মঞ্চসহ মিলনায়তন রয়েছে। এখানে একটি কম্পিউটার ল্যাব ছাড়াও দুইটি স্থায়ী মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, চারটি পৃথক ল্যাব রয়েছে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং কৃষি শিক্ষার জন্য। এখানে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে।[৯] বহু পুরাতন বিদ্যালয় হওয়ায় এ বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি বেশ সমৃদ্ধ ও বড়। এই বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বহুপুরাতন বই সংরক্ষিত আছে। এখানে পাঠসহায়ক বইসহ, গল্প, উপন্যাস, নাটক, কৌতুক, ইতিহাস গ্রন্থ, প্রবন্ধ, বিজ্ঞানভিত্তিক বই ও ধর্মীয় বই সহ বিভিন্ন ধরনের ১০,০০০ বই সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও স্কুল মাঠের একপাশে শহীদ মিনার আছে।[১০]
ভর্তি
[সম্পাদনা]২০২০ সালের পূর্বে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যোগ্য ছাত্ররা বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা তৃতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করত। তবে বর্তমানে লটারির মাধ্যমে ভর্তির কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় শ্রেণীতে প্রতি শাখায় ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। প্রভাতী শিফটে ১২০ জন ও দিবা শিফটে ১২০ জন সহ মোট ২৪০ জন ভর্তি হতে পারে। এছাড়াও ষষ্ঠ শ্রেণীতে প্রভাতী শিফটে ১২ জন ও দিবা শিফটে ১২ জন সহ মোট ২৪ জন ভর্তি হতে পারে। ডিসেম্বর মাসেই এ ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়।[১১]
শ্রেণী কার্যক্রম
[সম্পাদনা]বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রম দুইটি শিফটে বিভক্ত প্রভাতী ও দিবা। বিদ্যালয়ে উভয় শিফটে ৬টি পিরিয়ডে বিভক্ত করে শ্রেণী কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রভাতী শিফটের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ হয় দুপুর ১২ টায়। দিবা শিফটের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ হয় বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে। তবে এই সময়সীমা শুধুমাত্র ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর জন্য ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত শ্রেণী কার্যক্রম কিছুটা কম। উভয় শিফটে ৩য় পিরিয়ডের পর ৩০ মিনিটের জন্য বিরতি থাকে। এই সময় ছাত্রদের টিফিন দেওয়া হয়।[১]
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
[সম্পাদনা]- মোহাম্মদ সহিউদ্দিন - রাজনীতিবিদ
- সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার - চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য
- হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায় - ভারতীয় অভিনেতা
- শামসুজ্জামান দুদু - রাজনীতিবিদ
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- 1 2 3 4 5 6 7 8 9 "ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিহাস,পরিচিতি.pptx"। onedrive.live.com। ৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২২।
- 1 2 "V.j.govt. High School, Chuadanga - Sohopathi | সহপাঠী" (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ৩ জুলাই ২০১৭। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- 1 2 "EMIS | DSHE"। emis.gov.bd। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "V.j.govt. High School, Chuadanga - Sohopathi | সহপাঠী" (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ৩ জুলাই ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "বাংলাদেশের বিদ্যালয়ের তালিকা"। Wikiwand (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- 1 2 3 4 "Home | ভি.জে. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গা"। web.archive.org। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০২২।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বট: মূল ইউআরএলের অবস্থা অজানা (লিঙ্ক) - ↑ "চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত"। Meherpur Pratidin (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আর্সেনিক ও আয়রণ রিমুভাল প্লান্ট স্থাপন করলো ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন"। old.mathabhanga.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুলের লাইব্রেরিটির নতুন ভবনে যাত্রা শুরু"। old.mathabhanga.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গা"। vjghs.edu.bd। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০২২।
- ↑ "চুয়াডাঙ্গা ভিজে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন গ্রহণ শুরু"। mathabhanga.com।
