বিষয়বস্তুতে চলুন

অ্যামলথিয়া (প্রাকৃতিক উপগ্রহ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অ্যামলথিয়া
গ্যালিলিও প্রোব থেকে তোলা অ্যামলথিয়ার গ্রেস্কেল ছবি
আবিষ্কার
আবিষ্কারকই. ই. বার্নার্ড
আবিষ্কারের তারিখ৯ সেপ্টেম্বর, ১৮৯২
বিবরণ
উচ্চারণ/æməlˈθə/[]
নামকরণের উৎসঅ্যামলথিয়া (Ἀμάλθεια, Amaltheia)
বিশেষণঅ্যামলথিয়ান /æməlˈθən/[][]
কক্ষপথের বৈশিষ্ট্য
অনুসূর৮১১৫০ কিমি[]
অপসূর৮২৮৪০ কিমি[]
কক্ষপথের গড়
ব্যাসার্ধ
৮১৩৬৫.৮৪±০.০২ কিমি (২.৫৪ আরজে)[]
উৎকেন্দ্রিকতা০.০০৩১৯±০.০০০০৪[]
কক্ষীয় পর্যায়কাল০.৪৯৮১৭৯৪৩±০.০০০০০০০৭ d (১১ ঘণ্টা, ৫৭ মিনিট, ২৩ সেকেন্ড)[]
গড় কক্ষীয় দ্রুতি২৬.৫৭ কিমি/সে[]
নতি০.৩৭৪°±০.০০২° (বৃহস্পতির বিষুবরেখার প্রতি)[]
যার উপগ্রহবৃহস্পতি
ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ
মাত্রাসমূহ২৫০ × ১৪৬ × ১২৮ কিলোমিটার[]
গড় ব্যাসার্ধ৮৩.৫±২.০ কিমি[]
আয়তন(২.৪৩±০.২২)×১০ km3[]
ভর(২.০৮±০.১৫)×১০১৮ কিg[]
গড় ঘনত্ব০.৮৫৭±০.০৯৯ g/cm3[]
বিষুবীয় পৃষ্ঠের অভিকর্ষ≈ ০.০২০ m/s2 (≈ 0.002 g)[]
মুক্তি বেগ≈ ০.০৫৮ km/s[]
ঘূর্ণনকালসমলয়[]
অক্ষীয় ঢালশূন্য[]
প্রতিফলন অনুপাত০.০৯০±০.০০৫[]
পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ন্যূন মধ্যক সর্বোচ্চ
[] ১২০ কেলভিন ১৬৫ কেলভিন
আপাত মান১৪.১[]

    অ্যামলথিয়া (ইংরেজি: Amalthea, /æməlˈθə/) হল বৃহস্পতির একটি প্রাকৃতিক উপগ্রহ। বৃহস্পতির যতগুলি উপগ্রহের কথা জানা যায়, সেগুলির মধ্যে অ্যামলথিয়ার কক্ষপথ গ্রহটির তৃতীয় নিকটতম। বৃহস্পতির পঞ্চম আবিষ্কৃত উপগ্রহ বলে এটি বৃহস্পতি ৫ (ইংরেজি: Jupiter V) নামেও পরিচিত। ১৮৯২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এডওয়ার্ড এমারসন বার্নার্ড এটি আবিষ্কার করেন এবং গ্রিক পুরাণের অ্যামলথিয়ার নামানুসারে এটির নামকরণ করেন।[১০] অ্যামলথিয়াই প্রত্যক্ষ দৃষ্টিনির্ভর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আবিষ্কৃত শেষ প্রাকৃতিক উপগ্রহ; পরবর্তীকালের সকল উপগ্রহই আলোকচিত্র বা ডিজিটাল ইমেজিং-এর মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়।

    অ্যামলথিয়া বৃহস্পতির খুব কাছ থেকে সেটিকে প্রদক্ষিণ করছে। উপগ্রহটি এটির পৃষ্ঠভাগ থেকে উৎক্ষিপ্ত ধূলির দ্বারা গঠিত অ্যামলথিয়া ঊর্ণনাভ বলয়ের বহিঃপ্রান্তের মধ্যেই অবস্থিত।[১১] অ্যামলথিয়ার পৃষ্ঠভাগ থেকে বৃহস্পতির ব্যাসরেখাটি ৪৬.৫ ডিগ্রি কোণে অবস্থিত বলে মনে হয়।[] বৃহস্পতির অভ্যন্তরীণ উপগ্রহগুলির মধ্যে অ্যামলথিয়াই বৃহত্তম। এটি অনিয়তাকার এবং লালচে রঙের। মনে করা হয়, এই উপগ্রহটি সরন্ধ্র জলীয় বরফ ও অজ্ঞাত পরিমাণে অন্যান্য উপাদান দ্বারা গঠিত। এটির পৃষ্ঠভাগে বড়ো বড়ো আকারের সংঘাত গহ্বর ও শৈলশিরা দেখা যায়।[]

    ১৯৭৯ সালে ভয়েজার ১ মহাকাশযান খুব কাছ থেকে অ্যামলথিয়ার ছবি তোলে। ১৯৯০-এর দশকে গ্যালিলিও অরবিটার আরও বিস্তারিতভাবে উপগ্রহটিকে পর্যবেক্ষণ করে।[]

    ইতিহাস

    [সম্পাদনা]

    আবিষ্কার

    [সম্পাদনা]
    ভয়েজার ১ মহাকাশযান থেকে তোলা অ্যামলথিয়ার রঙিন ছবি (১৯৭৯)

    ১৮৯২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এডওয়ার্ড এমারসন বার্নার্ড লিক মানমন্দিরের ৩৬ ইঞ্চি (৯১ সেমি) প্রতিফলক দূরবীনটির মাধ্যমে অ্যামলথিয়া উপগ্রহটিকে আবিষ্কার করেন।[১০][১২] এটিই শেষ গ্রহীয় উপগ্রহ যা প্রত্যক্ষ দৃষ্টিনির্ভর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলেই কর্তৃক বৃহস্পতির চারটি বৃহত্তম উপগ্রহ আবিষ্কৃত হওয়ার পর অ্যামলথিয়াই ছিল বৃহস্পতির পঞ্চম আবিষ্কৃত উপগ্রহ।[১৩]

    অ্যামলথিয়ার নামকরণ করা হয়েছে গ্রিক পুরাণের উপদেবী অ্যামলথিয়ার নামানুসারে। ইনি শিশু জিউসকে (রোমান দেবতা জুপিটারের গ্রিক প্রতিরূপ) ছাগদুগ্ধ পান করিয়ে শুশ্রুষা করেছিলেন।[১৪] অ্যামলথিয়ার সংখ্যাগত নামটি হল বৃহস্পতি ৫। ১৯৭৬ সালেই প্রথম আইএইউ "অ্যামলথিয়া" নামটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে।[১৫][১৬] যদিও নামটি তার আগেই অনেক দশক থেকে লৌকিকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। নামটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন ক্যামিলে ফ্লেমারিয়ন[১৭] ১৯৭৬ সালের আগে অ্যামলথিকে সাধারণভাবে বৃহস্পতি ৫ নামেই অভিহিত করা হত।[]

    পাদটীকা

    [সম্পাদনা]
    1. 1 2 3 4 5 অন্যান্য স্থিতিমাপের ভিত্তিতে পরিগণিত।
    2. জ্ঞাত দূরত্ব, আকার, পর্যায়কাল ও দৃশ্যমান মাত্রার (পৃথিবী থেকে যা দেখা যায়) ভিত্তিতে পরিগণিত। Jupiter mj থেকে দৃশ্যমান মাত্রাগুলি পরিগণিত হয়েছে Earth mv-তে দৃশ্যমান মাত্রা থেকে সূত্র mj=mv−log2.512(Ij/Iv) ব্যবহার করে; এই সূত্রে Ij ও Iv হল নিজ নিজ ঔজ্জ্বল্য (দৃশ্য মান দেখুন)ম যার মাপদণ্ড বিপরীত বর্গ নীতির অনুসারী। দৃশ্য মানের জন্য দেখুন http://www.oarval.org/ClasSaten.htmবৃহস্পতি (গ্রহ)
    3. মহাজাগতিক বস্তুগুলির জ্ঞাত আকার ও দূরত্বের নিরিখে পরিগণিত। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত সূত্রটি হল 2*arcsin(Rb/Ro), এখানে Rb হল বস্তুটির ব্যাসার্ধ এবং Ro হল অ্যামলথিয়ার ব্যাসার্ধ বা বার্হস্পত্য পৃষ্ঠভাগ থেকে অ্যামলথিয়ার দূরত্ব।

    তথ্যসূত্র

    [সম্পাদনা]
    1. টেমপ্লেট:MW
    2. Basil Montagu (1848) The works of Francis Bacon, vol. 1, p. 303
    3. Isaac Asimov (1969) "Dance of the Satellites", The Magazine of Fantasy and Science Fiction, vol. 36, p. 105–115
    4. 1 2 3 4 Cooper Murray et al. 2006
    5. 1 2 3 4 5 6 Thomas Burns et al. 1998
    6. 1 2 3 Anderson Johnson et al. 2005
    7. Simonelli Rossier et al. 2000
    8. 1 2 Simonelli 1983
    9. Observatorio ARVAL
    10. 1 2 Barnard 1892
    11. Burns Simonelli et al. 2004
    12. Lick Observatory (১৮৯৪)। A Brief Account of the Lick Observatory of the University of California। The University Press। পৃ. ৭–।
    13. Bakich M. E. (২০০০)। The Cambridge Planetary Handbook। Cambridge University Press। পৃ. ২২০–২২১। আইএসবিএন ৯৭৮০৫২১৬৩২৮০৫
    14. "Planet and Satellite Names and Discoverers"Gazetteer of Planetary Nomenclature। International Astronomical Union (IAU) Working Group for Planetary System Nomenclature (WGPSN)। ২১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৪
    15. Blunck J. (২০১০)। Solar System Moons: Discovery and Mythology (পিডিএফ)। Springer। পৃ. ৯–১৫। বিবকোড:2010ssm..book.....Bডিওআই:10.1007/978-3-540-68853-2আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৫৪০-৬৮৮৫২-৫। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০২০
    16. Flammarion C.; Kowal C.; Blunck J. (৭ অক্টোবর ১৯৭৫)। "Satellites of Jupiter"IAU Circular। Central Bureau for Astronomical Telegrams। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৪ (টেমপ্লেট:Bibcode)
    17. Flammarion 1893
    18. Fieseler P. D.; Adams O. W.; Vandermey N.; Theilig E. E.; Schimmels K. A.; Lewis G. D.; Ardalan S. M.; Alexander C. J. (২০০৪)। "The Galileo star scanner observations at Amalthea"। Icarus১৬৯ (2): ৩৯০–৪০১। বিবকোড:2004Icar..169..390Fডিওআই:10.1016/j.icarus.2004.01.012
    19. Fieseler P. D.; Ardalan S. M. (৪ এপ্রিল ২০০৩)। "Objects near Jupiter V (Amalthea)"IAU Circular। Central Bureau for Astronomical Telegrams। ২ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৪ (টেমপ্লেট:Bibcode)
    20. "Another Find for Galileo"। Jet Propulsion Laboratory। ৯ এপ্রিল ২০০৩। ৪ নভেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০১২ {{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি journal এর জন্য |journal= প্রয়োজন (সাহায্য)
    21. Emily Lakdawalla (১৭ মে ২০১৩)। "A serendipitous observation of tiny rocks in Jupiter's orbit by Galileo"। The Planetary Society। ১৪ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১৪

    উল্লিখিত সূত্র

    বহিঃসংযোগ

    [সম্পাদনা]

    আরও দেখুন

    [সম্পাদনা]