ক্রিকেট বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ
ক্রিকেট বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ নির্ধারণ করা হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদ ভোটের মাধ্যমে। এরপূর্বে আগ্রহী দেশগুলোর দরপত্রে উল্লেখিত বিষয়াবলী যাচাই-বাছাই করে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ন্যায় বৃহৎ আসর ক্রিকেট জনপ্রিয় দেশগুলোয় অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিকাংশ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা যৌথভাবে একই ভৌগোলিক অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৮৭, ১৯৯৬ ও ২০১১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায়, অস্ট্রালেশিয়ায় ১৯৯২, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে ২০০৩ ও ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজন হয়।
প্রথম তিনটি বিশ্বকাপসহ মোট চারবার ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ হয়। ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩ ও ১৯৯৯ সালে দেশটি স্বাগতিকের মর্যাদা পায়। এছাড়াও ২০১৯ সালে পঞ্চমবারের মতো তারা স্বাগতিক দেশ হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে। একমাত্র দেশ হিসেবে ১৯৭৫ ও ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড একাকী বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। প্রতিযোগিতার একমাত্র স্বাগতিক দেশ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া স্বত্ত্বেও ১৯৮৩ ও ১৯৯৯ সালের প্রতিযোগিতার কিছু খেলা আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসে আয়োজিত হয়েছিল। ২০০৭ সালের প্রতিযোগিতা ওয়েস্ট ইন্ডিজে হলেও একক আয়োজকের মর্যাদা দেয়া হয়নি। ১৫টি ইংরেজিভাষী ক্যারিবিয় দেশসহ ব্রিটিশ উপনিবেশ ও অন্যান্য উপনিবেশের ক্রীড়া সংগঠন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডে প্রতিনিধিত্ব করে।
লন্ডনের লর্ড’স ক্রিকেট গ্রাউন্ড একমাত্র মাঠ হিসেবে একাধিক বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা আয়োজন করেছে। চারবার ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সকল বিশ্বকাপের ফাইনালই লর্ডসে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা ও ভারত একমাত্র আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ জয় করেছে। ১৯৯৬ ও ২০১১ সালের বিশ্বকাপে যৌথভাবে আয়োজনের দায়িত্বে থাকাকালীন তারা এ সম্মাননা অর্জন করে।
স্বাগতিকের তালিকা
(১) ইংল্যান্ড এককভাবে স্বাগতিক দলের মর্যাদা পায়। কিন্তু, ওয়েলসে একটি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
(২) ইংল্যান্ড এককভাবে স্বাগতিক দলের মর্যাদা পায়। কিন্তু, স্কটল্যান্ডে দুইটি এবং আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও ওয়েলসে একটি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
(৩) পাকিস্তান ২০১১ বিশ্বকাপে সহ-স্বাগতিকের মর্যাদা পায়। কিন্তু, লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের উপর হামলার প্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে আইসিসি অনিশ্চিত নিরাপত্তাজনিত কারণে এ অধিকার ফিরিয়ে নেয়।
স্বাগতিক দেশ নির্বাচন
ইংল্যান্ড প্রথম তিনটি প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক দেশের মর্যাদা পায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় যে, প্রথম প্রতিযোগিতাটি ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে। এর প্রধান কারণ ছিল যে, উদ্বোধনী প্রতিযোগিতা আয়োজনের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাদি বিদ্যমান রযেছে। ভারত ক্রিকেট বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে স্বাগতিক হবার আগ্রহ দেখালেও অধিকাংশ আইসিসি’র সদস্য জুন মাসে পর্যাপ্ত দিবালোক থাকায় ইংল্যান্ডের পক্ষেই তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেন। এর মানে হলো - একটি খেলা আয়োজনে একদিনেই শেষ করা সম্ভব।[১]
১৯৭৫, ১৯৭৯ ও ১৯৮৩† স্বাগতিক:
ইংল্যান্ড
- †১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ড এককভাবে স্বাগতিক দলের মর্যাদা পেলেও ওয়ালসের সোয়ানসিতে একটি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ইংল্যান্ডের বাইরে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৭ সালে। ভারত ও পাকিস্তান যৌথভাবে এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। স্থান পরিবর্তনের ফলে দিবালোক কম হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রতি দলের ইনিংসের ওভার সংখ্যা ষাট থেকে পঞ্চাশ ওভারে নির্ধারণ করা হয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ঘূর্ণায়মান নীতির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পায়। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবারই প্রথম ক্যারিবিয় অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রধান কারণ ছিল অতীতে বিশ্বকাপগুলোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল দ্বিতীয় সফলতম দল ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফ্লোরিডার লডারহিলে নব নির্মিত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা আয়োজনের জন্য ব্যাপকভাবে চেষ্টা চালালেও আইসিসি সকল খেলাই ক্যারিবিয় দেশগুলোয় আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়াও, বারমুডা, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডা আয়োজক হবার আগ্রহ প্রকাশ করে ও জামাইকা পুনরায় আগ্রহ প্রকাশ করলেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
ফলাফল:
ওয়েস্ট ইন্ডিজপ্রত্যাখ্যাত
বারমুদাপ্রত্যাখ্যাত
সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জপ্রত্যাখ্যাত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
২০০৭ স্বাগতিক:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
২০১১ স্বাগতিক:
বাংলাদেশ,
ভারত ও
শ্রীলঙ্কা
২০১৫ স্বাগতিক:
অস্ট্রেলিয়া ও
নিউজিল্যান্ড
২০১৯ স্বাগতিক:
ইংল্যান্ড
তথ্যসূত্র
- ↑ "The 1979 World Cup in England"। cricinfo.com। ২৩ মে ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬।