ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন, ২০১৯
| |||||||||||||||||||||||||
|
| |||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) কেন্দ্রীয় কমিটি ও হল সংসদসমূহের নির্বাচন ২০১৯ সালের ১১ই মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেটি ছিল ১৯৯০-এর পর প্রথম ডাকসু নির্বাচন। নির্বাচনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর সভাপতি (ভিপি), বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গোলাম রব্বানী সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।[১]
প্রেক্ষাপট
[সম্পাদনা]২০১২ সালের ১১ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন।[২] ২০১৭ সালের ৪ঠা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন অত্যাবশ্যক, 'তা না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে।’[৩] ২০১৭ সালে ২৫শে নভেম্বর থেকে ৯ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশন করেন সমাজকল্যাণ অনুষদের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের ছাত্র ওয়ালিদ আশরাফ।[৪] ২০১২ সালের ১১ই মার্চ দাখিলকৃত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের উচ্চ আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ডাকসু নির্বাচনের নির্দেশ দেয়।[৫] উচ্চ আদালতের আদেশের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচনের কোনো আয়োজন দৃশ্যমান না হওয়ায় ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠান রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।[৬] জবাব না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর উপাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন তিনি।[৬] উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে ২০১৮'র ১৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ঘোষণা দেয় যে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ডাকসুর নির্বাচন।[৭]
নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড
[সম্পাদনা]২০১৯ সালের ২৩শে জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ১১ই মার্চ ২০১৯ নির্ধারণ করেন।[৮][৯][১০][১১] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমানকে প্রধান নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।[১২][১৩] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে ডাকসু ও হল সংসদ গঠনতন্ত্রের ৮(ই) ধারা অনুযায়ী তাঁকে এই নিয়োগ প্রদান করেন।[১২][১৩] প্রধান নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তাকে সহায়তা করার জন্য আরো পাঁচ জন নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।[১২][১৪] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমাদকে আহ্বায়ক করে ৭-সদস্য বিশিষ্ট ‘আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।[১২][১৫] ১১ই ফেব্রুয়ারি প্রধান তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।[১৬] ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডাকসুর ২৫টি পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়।[১৭]
ফলাফল
[সম্পাদনা]ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ প্যানেলের নুরুল হক নুর ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট।[১৮] এছাড়া জিএস পদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এজিএস পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন ডাকসুর ইতিহাসের সর্বোচ্চ ভোট (১৫,৩০১) পেয়ে নির্বাচিত হন। এছাড়াও একমাত্র ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের পদ ছাড়া মোট ২৫ টি পদের মধ্যে ২৩ টি পদেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থীগণ বিজয়ী হন।
২০১৯-এ নির্বাচিত ডাকসুর কার্যনির্বাহী সংসদ
[সম্পাদনা]২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্রজোট এবং স্বতন্ত্র জোট ২৫ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করে। এক্ষেত্রে দল মত নির্বিশেষে ডাকসু কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী সবচেয়ে যোগ্য তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনে মোট ২৫ টি পদের মধ্যে ২৩টি পদেই নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের প্রার্থীরা। অন্যদিকে ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের পদে জয়ী হয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ মনোনীত প্রার্থীরা।
| ক্রমিক | নির্বাচিত প্রার্থী | পদ | ছাত্র সংগঠন |
|---|---|---|---|
| ১ | নুরুল হক নুর | সহ-সভাপতি | বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ |
| ২ | গোলাম রব্বানী | সাধারণ সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৩ | সাদ্দাম হোসেন | সহ-সাধারণ সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৪ | সাদ বিন কাদের চৌধুরী | স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৫ | আরিফ ইবনে আলী | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৬ | লিপি আক্তার | কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৭ | শাহরিমা তানজিনা অর্নি | আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৮ | মাজহারুল কবির শয়ন | সাহিত্য সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ৯ | আসিফ তালুকদার | সংস্কৃতি সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১০ | শাকিল আহমেদ তানভীর | ক্রীড়া সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১১ | শামস ই নোমান | ছাত্র পরিবহন সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১২ | আখতার হোসেন | সমাজসেবা সম্পাদক | বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ |
| ১৩ | যোশীয় সাংমা চিবল | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১৪ | রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১৫ | তানভীর হাসান সৈকত | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১৬ | তিলোত্তমা শিকদার | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১৭ | নিপু ইসলাম তন্বী | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১৮ | রাইসা নাসের | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ১৯ | সাবরিনা ইতি | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ২০ | রাকিবুল হাসান রাকিব | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ২১ | নজরুল ইসলাম | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ২২ | ফরিদা পারভীন | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ২৩ | মাহমুদুল হাসান | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ২৪ | সাইফুল ইসলাম রাসেল | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
| ২৫ | রফিকুল ইসলাম সবুজ | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
কার্যনির্বাহী সংসদ (২০১৯) এর কর্মকাণ্ড
[সম্পাদনা]২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের পর দীর্ঘ ২৮ বছর পর কর্মচঞ্চলতা ফিরে পায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। সম্পাদকগণ নিজ নিজ পদ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে নানামুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা তথা সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে কাজ শুরু করেন। এই সংসদের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে-
- ১৮টি হলে মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভ তৈরি, হলগুলোতে 'বঙ্গবন্ধু কর্নার'[২০] স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের একশ’ অসচ্ছল শিক্ষার্থীর মধ্যে সাইকেল বিতরণ কর্মসূচি ইত্যাদি।
- সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে একাধিক ওয়ার্কশপ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশনের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য জব ফেয়ার, আউটসোর্সিং এ আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য একাধিক টেকনোলজি কনফারেন্স, প্রযুক্তি খাতে নারীদের অংশগ্রহন নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ডাকসু টেকক্রাঞ্চ, সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অলিম্পিয়াড[২১], টিএসসিতে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সেবা[২২], বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজেশন প্রোগ্রামের আওতায় অনলাইনের মাধ্যমে মার্কশীট ও সার্টিফিকেট[২৩] উত্তোলনের আবেদন এবং ফি প্রদানের সুযোগ, শিক্ষার্থীদের জন্য স্কিল ভিত্তিক বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ইত্যাদির আয়োজন করেছেন।
- ৭টি প্রকাশনা বঙ্গবন্ধু বইমেলা[২৪] এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বইমেলা[২৫] নামের দুটি মেলার আয়োজন, দিবস ভিত্তিক কর্মসূচি পালন, সিরিজ বক্তৃতার আয়োজন করেছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখা প্রকাশের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন।
- মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ডাকসু মুজিববর্ষ অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া উৎসব[২০] সহ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষ্যেও তিনি ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছেন। প্রতিযোগীতায় তিনি ক্রিকেট ফুটবলের মতো বহু প্রচলিত খেলার পাশাপাশি হাডুডুর মতো দেশীয় খেলাও অন্তর্ভুক্ত করেন।
- ডিইউ থিংকস নামক একটি প্রোগ্রাম চালু করেন যেখানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা থিসিস প্রেজেন্ট করেন।
- বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইল এপ ভিত্তিক সাইকেল সেবা 'জোবাইক' চালু[২৬]
- ডাকসুর ক্যাফেরিয়ার খাবারের মান উন্নয়ন, হলের খাবারের মূল্য নির্ধারণ, কার্জন হল এবং মোকাররম ভবনে ক্যান্টিন স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ, কলাভবনে ছাত্রী কমনরুমের সংস্কার।
- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রোগ্রাম, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ফার্স্ট এইড প্রোগ্রাম।
- ছাত্রী হল ও একাডেমিক ভবন গুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত হাইজিনের জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন[২৭], নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বাই-সাইকেল ট্রেনিং আয়োজন ইত্যাদি।
কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ উত্তীর্ণ
[সম্পাদনা]ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬ (গ) ধারায় অনুযায়ী "নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা ৩৬৫ দিনের জন্য কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন না হলে তারা অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্বে থাকবেন। ওই ৯০ দিনের আগে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাকসুর আগের কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে।" গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অতিরিক্ত ৯০ দিনেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে। ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ দায়িত্ব নেন ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। সেই হিসাবে গত ২২ মার্চ, ২০২০ নির্ধারিত ৩৬৫ দিনের মেয়াদ পূর্ণ করেছে ডাকসুর বর্তমান কমিটি। পরবর্তীতে, অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্ব পালন শেষে ২২ জুন ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। ফলে, ২৩ জুন ২০২০ থেকে এই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে এই কমিটির সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে। তাদের যুক্তি করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় তারা পুরোপুরি দায়িত্ব পালন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সর্বশেষ, গত ২২ জুন রাতে মেয়াদ শেষ হলেই পদ ছাড়ে দেবেন বলে জানান সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, কিন্তু সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর জানান, উপাচার্যের সিদ্ধান্তের পর পদ ছাড়বেন তিনি। তবে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে চান তারা দুজনই।[২৮] অন্যদিকে, এই কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন মনে করেন কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও পদে বহাল থাকা অগণতান্ত্রিক, গঠনতন্ত্রবিরোধী ও অনৈতিক। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ডাকসুর গঠনতন্ত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন অনুসরণ করেই সবকিছু করা হবে।[২৯] গত ২২ জুন ২০২০ সালে বর্তমান ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন বা এই সংসদের সদস্যদের দায়িত্ব পালন নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে, মেয়াদ শেষ হলেও কোন সদস্যদের দায়িত্ব থেকে অব্বহতি বা পদত্যাগের খবর পাওয়া যায়নি।[৩০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ নুর ভিপি, রাব্বানী জিএস, সাদ্দাম এজিএস। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৫।
- ↑ "ডাকসু নির্বাচন করতে হবে ৬ মাসের মধ্যে"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "ডাকসু ইলেকশন ইজ মাস্ট: রাষ্ট্রপতি"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন ওয়ালিদ"। প্রথম আলো। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "আশ্বাসেই ২৮ বছর পার ডাকসু নির্বাচন"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৯।
- 1 2 "ডাকসু নির্বাচন: আপিলের আবেদন ঢাবি কর্তৃপক্ষের"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "১১ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন"। বিবিসি। ২৩ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Make Ducsu centre of all campus activities"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Dhaka University announces election to its Central Students Union after three decades"। বিডিনিউজ২৪ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "১১ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন"। বিবিসি বাংলা। ২৩ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "আলাপন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু নির্বাচন"। ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- 1 2 3 4 উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;:4নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - 1 2 "ডাকসু নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমানকে চীফ রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৭ জানুয়ারি ২০১৯। ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "ডাকসু নির্বাচন পরিচালনায় চীফ রিটার্নিং অফিসারকে সহায়তার জন্য ৫জন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা)-এর নেতৃত্বে ৭-সদস্য বিশিষ্ট আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটি গঠন"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "১১ মার্চই ডাকসু নির্বাচন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের কোনো মার্কা নেই"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "ডাকসুতে ছাত্রলীগের শোভন পরাজিত, নুরুল ভিপি" (ব্রিটিশ ইংরেজি ভাষায়)। ১২ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৯।
- ↑ "ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী যাঁরা"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০২০।
- 1 2 "ঢাবির হলগুলোতে 'বঙ্গবন্ধু কর্নার', উদ্বোধন ২৩ জানুয়ারি"। সমকাল (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "ডাকসু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অলিম্পিয়াড-২০২০ অনুষ্ঠিত | শিক্ষাঙ্গন"। ittefaq। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "ডাকসুর উদ্যোগে ঢাবিতে দ্রুত গতির ইন্টারনেট চালু"। thedailycampus.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ https://www.jagonews24.com/campus/news/543478
- ↑ রিপোর্টার, বিশ^বিধ্যালয়। "ডাকসু সাহিত্য মঞ্চের 'বঙ্গবন্ধু বইমেলা' আয়োজন"। DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বইমেলা শুরু আজ"। RisingBD Online Bangla News Portal (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হলো জোবাইক"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "ঢাবিতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিনের উদ্বোধন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ "পদ ছাড়বেন রাব্বানী, উপাচার্যের অপেক্ষায় ভিপি নুর | banglatribune.com"। Bangla Tribune। ২৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ "বহাল থাকতে চান নুরুল-রাব্বানী, 'অনৈতিক' বলছেন সাদ্দাম"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ "ডাকসুর মেয়াদ শেষ, আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২০।