নেয়্যাড (প্রাকৃতিক উপগ্রহ)
ভয়েজার ২ থেকে দৃষ্ট নেয়্যাড | |
| আবিষ্কার | |
|---|---|
| আবিষ্কারক | ভয়েজার চিত্রগ্রাহক দল |
| আবিষ্কারের তারিখ | সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯ |
| বিবরণ | |
| উচ্চারণ | /ˈneɪæd/ বা /ˈnaɪæd/,[১][২] /ˈneɪəd/ or /ˈnaɪəd/[৩] |
| নামকরণের উৎস | বহু. Ναϊάδες নেয়্যাড |
| বিশেষণ | নেয়্যাডীয় /-ˈædiən/[৪] |
| কক্ষপথের বৈশিষ্ট্য[৫][৬] | |
| যুগ ১৮ অগস্ট, ১৯৮৯ | |
| অর্ধ-মুখ্য অক্ষ | ৪৮২২৪.৪১ কিলোমিটার |
| উৎকেন্দ্রিকতা | ০.০০৪৭ ± ০.০০১৮ |
| কক্ষীয় পর্যায়কাল | ০.২৯৪৩৯৫৮ ± ০.০০০০০০২ ডি |
| নতি |
|
| যার উপগ্রহ | নেপচুন |
| ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ | |
| মাত্রাসমূহ | ৯৬×৬০×৫২ কিলোমিটার[৭][৮] |
| গড় ব্যাসার্ধ | ৩০.২ ± ৩.২ কিলোমিটার[৬] |
| গড় ঘনত্ব | ০.৮±০.৪৮ g/cm3[৯] |
| ঘূর্ণনকাল | সমলয় |
| অক্ষীয় ঢাল | শূন্য |
| প্রতিফলন অনুপাত | ০.০৭২[৭][১০] |
| তাপমাত্রা | ~৫১ কে গড় (আনুমানিক) |
| আপাত মান | ২৩.৯১[১০] |
নেয়্যাড (ইংরেজি: Naiad, /ˈneɪæd/) বা নেপচুন ৩ (ইংরেজি: Neptune III) হল নেপচুন গ্রহের নিকটতম প্রাকৃতিক উপগ্রহ। পূর্বে এটিকে এস/১৯৮৯ এন ৬ (ইংরেজি: S/1989 N 6) নামে চিহ্নিত করা হত। নেপচুনের কেন্দ্রস্থল থেকে ৪৮২২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই উপগ্রহটি গ্রিক পুরাণের নেয়্যাডের নামাঙ্কিত।[১১] নেয়্যাড নেপচুনের সঙ্গে জোয়ারের বন্ধনে আবদ্ধ। তাই দিগন্তরেখার উপর এটির কক্ষপথের কৌণিক দূরত্ব ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে নেপচুনের বায়ুমণ্ডলের সংঘাতের ফলে এটি নতুন একটি বলয়ে পরিণত হবে।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]
১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যভাগে কোনও এক সময়ে ভয়েজার ২ প্রোব থেকে গৃহীত আলোকচিত্রগুলি থেকে নেয়্যাড আবিষ্কৃত হয়। এই ফ্লাইবাইয়ের সময় আবিষ্কৃত শেষ উপগ্রহ হিসেবে এটির অস্থায়ী নামকরণ করা হয়েছিল "এস/১৯৮৯ এন ৬"।[১২] ১৯৮৯ সালেরই ২৯ সেপ্টেম্বর আইএইউ-এর ৪৮৬৭ নং সার্কুলারে আবিষ্কারের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় এবং সেই প্রসঙ্গে "১১ দিনে গৃহীত ২৫টি ছবি"র কথাও উল্লেখ করা হয়। এর থেকে বোঝা যায়, উপগ্রহটি ১৮ সেপ্টেম্বরের আগেই কোনও এক সময় আবিষ্কৃত হয়েছিল। উপগ্রহটির আনুষ্ঠানিক স্থায়ী নামকরণ করা হয় ১৯৯১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর।[১৩]
ভৌত বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]নেয়্যাড একটি অনিয়তাকার উপগ্রহ। সম্ভবত নেপচুনের আদি উপগ্রহগুলির ধ্বংসবশেষ থেকে নুড়ি পুনঃসৃজিত হয়ে এই উপগ্রহটির উৎপত্তি ঘটে। উল্লেখ্য, মনে করা হয় যে ট্রাইটন নেপচুনের মাধ্যাকর্ষণের জালে আবদ্ধ হয়ে একটি অত্যন্ত উৎকেন্দ্রিক প্রাথমিক কক্ষপথে স্থাপিত হওয়ার কিছুকালের মধ্যেই এই আদি উপগ্রহগুলি এক বিশৃঙ্খল অবস্থা পড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।[১৪]
কক্ষপথ
[সম্পাদনা]
একটি "পরিহারের নৃত্যে" পরবর্তী বাহ্যিক উপগ্রহ থ্যালাসার সঙ্গে নেয়্যাডের কক্ষীয় অনুনাদ ৭৩:৬৯। নেপচুনকে প্রদক্ষিণ করার সময় অধিকতর নতি-যুক্ত নেয়্যাড সফলভাবে প্রথমে উপর থেকে দু’বার ও তারপর নিচ থেকে দু’বার অতিক্রম করে যায়। পৃথিবীর হিসেবে প্রতি ~২১.৫ দিনে এই অতিক্রমণের একটি চক্র সম্পূর্ণ হয়। পরস্পরকে অতিক্রম করার সময় দু’টি উপগ্রহের দূরত্ব থাকে প্রায় ৩৫৪০ কিলোমিটার। এই দু’টির কক্ষীয় ব্যাসার্ধের মধ্যে পার্থক্য মাত্র ১৮৫০ কিলোমিটার হলেও নেয়্যাড নিকটতম অবস্থানে থ্যালাসার উপরে বা নিচে ~২৮০০ কিলোমিটার ঘুরে যায়। এইভাবে এই অনুনাদ এই ধরনের অন্যান্য অনেক কক্ষীয় পারস্পরিক সম্পর্কের মতো সংযোগস্থলে সর্বাধিক পৃথকীকরণের মাধ্যমে কক্ষপথগুলিকে স্থায়িত্ব দান করছে। যদিও যেখানে উৎকেন্দ্রিকতা যৎসামান্য সেখানে এই এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে কক্ষীয় নতির এহেন ভূমিকা সচরাচর দেখা যায় না।[৯][১৫]
পর্যবেক্ষণ
[সম্পাদনা]ভয়েজার ২ ফ্লাইবাই অতিক্রমণের পর নেপচুন মণ্ডলীটি পৃথিবীস্থ মানমন্দিরগুলি থেকে এবং সেই সঙ্গে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ থেকে বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষিত হয়। ২০০২-০৩ সালে কেক টেলিস্কোপ অ্যাডাপটিভ অপটিকস ব্যবহার করে উক্ত মণ্ডলীটি পর্যবেক্ষণ করে চারটি বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ উপগ্রহ সহজেই শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। একই পদ্ধতি ব্যবহার করে থ্যালাসা আবিষ্কৃত হলেও নেয়্যাডের অবস্থান চিহ্নিত করা যায়নি।[১৬] সকল জ্ঞাত উপগ্রহ ও ভয়েজার ২ কর্তৃক আবিষ্কৃত উপগ্রহগুলির থেকেও অস্পষ্টতর সম্ভাব্য নতুন উপগ্রহগুলিকে শনাক্ত করার উপযোগী প্রযুক্তি হাবল স্পেস টেলিস্কোপের ছিল। ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর সেটি ইনস্টিটিউট আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে যে, ২০০৪ সাল থেকে হাবল কর্তৃক গৃহীত এবং তথ্যভাণ্ডারে সঞ্চিত হতে থাকা ছবিগুলি থেকে নেয়্যাডকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।[১৭] নেয়্যাডের এফেমেরিসে গুরুত্বপূর্ণ ভুল থাকায় অবস্থানের হদিস হারিয়ে গিয়েছিল বলে যে সন্দেহ করা হয়েছিল,[১৮] তা সঠিক প্রতিপন্ন হয়; কারণ নেয়্যাড তার প্রত্যাশিত অবস্থানের থেকে ৮০ ডিগ্রি দূরে অবস্থিত।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Noah Webster (1884) A Practical Dictionary of the English Language
- ↑ "naiad"। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। (Sসাবস্ক্রিপশন বা পার্টিশিপেটিং ইনস্টিটিউট মেম্বারশিপ প্রয়োজনীয়.)
- ↑ টেমপ্লেট:MW
- ↑ Morris (1904) British violin-makers
- ↑
Jacobson, R. A.; Owen, W. M., Jr. (২০০৪)। "The orbits of the inner Neptunian satellites from Voyager, Earthbased, and Hubble Space Telescope observations"। Astronomical Journal। ১২৮ (3): ১৪১২–১৪১৭। বিবকোড:2004AJ....128.1412J। ডিওআই:10.1086/423037।
{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক) - 1 2 Showalter, M. R.; de Pater, I.; Lissauer, J. J.; French, R. S. (২০১৯)। "The seventh inner moon of Neptune" (পিডিএফ)। Nature। ৫৬৬ (7744): ৩৫০–৩৫৩। বিবকোড:2019Natur.566..350S। ডিওআই:10.1038/s41586-019-0909-9। পিএমসি 6424524। পিএমআইডি 30787452। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০২০।
- 1 2 Karkoschka, E. (২০০৩)। "Sizes, shapes, and albedos of the inner satellites of Neptune"। Icarus। ১৬২ (2): ৪০০–৪০৭। বিবকোড:2003Icar..162..400K। ডিওআই:10.1016/S0019-1035(03)00002-2।
- ↑ Williams, D. R. (২২ জানুয়ারি ২০০৮)। "Neptunian Satellite Fact Sheet"। NASA (National Space Science Data Center)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০০৮।
- 1 2 Brozović, M.; Showalter, M. R.; Jacobson, R. A.; French, R. S.; Lissauer, J. J.; de Pater, I. (৩১ অক্টোবর ২০১৯)। "Orbits and resonances of the regular moons of Neptune"। Icarus। ৩৩৮ (2): ১১৩৪৬২। আরজাইভ:1910.13612। ডিওআই:10.1016/j.icarus.2019.113462।
- 1 2 "Planetary Satellite Physical Parameters"। JPL (Solar System Dynamics)। ২৪ অক্টোবর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Planet and Satellite Names and Discoverers"। Gazetteer of Planetary Nomenclature। USGS Astrogeology। ২১ জুলাই ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০০৬।
- ↑ Green, D. W. E. (২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯)। "Neptune"। IAU Circular। ৪৮৬৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১১।
- ↑ Marsden, B. G. (১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯১)। "Satellites of Saturn and Neptune"। IAU Circular। ৫৩৪৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১১।
- ↑ Banfield, D.; Murray, N. (অক্টোবর ১৯৯২)। "A dynamical history of the inner Neptunian satellites"। Icarus। ৯৯ (2): ৩৯০–৪০১। বিবকোড:1992Icar...99..390B। ডিওআই:10.1016/0019-1035(92)90155-Z।
- ↑ "NASA Finds Neptune Moons Locked in 'Dance of Avoidance'"। Jet Propulsion Laboratory। ১৪ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ Marchis, F.; Urata, R.; de Pater, I.; Gibbard, S.; Hammel, H. B.; Berthier, J. (মে ২০০৪)। "Neptunian Satellites observed with Keck AO system"। American Astronomical Society, DDA meeting #35, #07.08; Bulletin of the American Astronomical Society। খণ্ড ৩৬। পৃ. ৮৬০। বিবকোড:2004DDA....35.0708M।
- ↑ "Lost Neptune Moon Re-Discovered"। ১২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ Showalter, M. R.; Lissauer, J. J.; de Pater, I. (আগস্ট ২০০৫)। "The Rings of Neptune and Uranus in the Hubble Space Telescope"। American Astronomical Society, DPS meeting #37, #66.09; Bulletin of the American Astronomical Society। খণ্ড ৩৭। পৃ. ৭৭২। বিবকোড:2005DPS....37.6609S।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Naiad Profile by NASA's Solar System Exploration
- Neptune's Known Satellites (by Scott S. Sheppard)
- Archival Hubble Images Reveal Neptune's “Lost” Inner Moon (SETI : October 8, 2013)
- ইউটিউবে Neptune Moon Dance (animation) from NASA Jet Propulsion Laboratory
