বিষয়বস্তুতে চলুন

হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
অবস্থান
টাউন হল রোড

,
৩৩০০

তথ্য
ধরনসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৮৩; ১৪২ বছর আগে (1883)
বিদ্যালয় জেলাহবিগঞ্জ জেলা
বিদ্যালয় কোড১৭৫০
ইআইআইএন১২৯৪১৭
প্রধান শিক্ষকজনাব মোঃ খলিলুর রহমান
শ্রেণিতৃতীয় থেকে দশম
লিঙ্গবালক
শিক্ষা ব্যবস্থাজাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড
শিক্ষায়তন২৯.১৮ একর
অন্তর্ভুক্তিমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট

হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও কালের পরিক্রমায় পরবর্তিতে এটি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
স্কুলের সামনের ফটক থেকে বিদ্যালয়।

হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ১৮৪৩ সালে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের অদূরে লস্করপুর নামক স্থানে অবস্থিত ছিল।[] লস্করপুর ছিল তখন সিলেট জেলার অধীনে, হবিগঞ্জ মাহকুমার সদর দপ্তর। ১৮৬৩ সালে উক্ত বিদ্যালয়টি এম. ই. স্কুল (মিডেল ইংলিশ স্কুল) হিসেবে রূপান্তরিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৮৮১ সালে মহকুমার প্রশাসনিক দপ্তরসমূহ লস্করপুর থেকে হবিগঞ্জ শহরে স্থানান্তরিত হলে অন্যান্য দপ্তরের মত এম. ই. স্কুলটিও স্থানান্তরিত হয় এবং তখন এর অবস্থান হয় পৌর অডিটোরিয়ামের পার্শে।[]

বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের একাংশ

১৮৮৩ সালের জানুয়ারির ১ তারিখে বিদ্যালয়টি একটি পূর্ণমাত্রার উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যশোর নিবাসী বাবু রসিক লাল সেন প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১৮৮৩ - ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারির ১ তারিখে বিদ্যালয়টির পরিচালনার ভার সরকার গ্রহণ করে; বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং তাদের অর্জিত ফলাফল দ্বারা বিদ্যালয়ের গৌরব বৃদ্ধি করে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহুমুখী কার্যক্রমের ভাল ফলাফল সহজেই তৎকালীন ব্রিটিশ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯০৪ সালে তৎকালীন আসামের চিফ কমিশনার বিদ্যালয়ের গৃহ নির্মাণের জন্য দশ হাজার টাকা মঞ্জুর করেন। উক্ত টাকা, বিদ্যালয়ের তহবিল, ও জনগণের প্রদত্ত অনুদানে বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৯০৭ সালে এর সমাপ্তি হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

নির্মাণাধীন নতুন একাডেমিক ভবনের একাংশ

বিবরণ

[সম্পাদনা]
স্কাউট ডেন ভবনের একাংশ

বিদ্যালয়ের মোট ভূমির পরিমাণ ২৯.১৮ একর। যার মাঝে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভূমির পরিমাণ ৯.৫৮ একর এবং খেলার মাঠের ভূমির পরিমাণ ১৯.৬ একর। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসোর্স সেন্টার স্থাপনের জন্য বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উত্তর-পশ্চিম কোণে ৩৩ শতক ভুমি প্রদান করা হয়েছে। খেলার মাঠের অফিস সংলগ্ন এলাকায় ১.৫ একর ভূমিতে কিবরিয়া পৌর মিলনায়তন স্থাপন করা হয়েছে; যাতে পৌর কর্তৃপক্ষের স্মারক নং হঃপৌঃ/প্রশাঃ/২০০৩-৭৬৭ তাং-০৪/০৬/০৩ মোতাবেক কোনো অর্থ ছাড়াই বিদ্যালয়ের যেকোনো অনুষ্ঠান করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে বিদ্যালয়ের পাঞ্জেগানা মসজিদ। বিদ্যালয়ের পশ্চিম সীমানায় ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্ট প্রদত্ত একটি দোতলা দালানে বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস রয়েছে।

বিদ্যালয় পরিক্রমা

[সম্পাদনা]
পুকুরের অপর প্রান্ত থেকে বিদ্যালয়ের চিত্র

প্রতিদিন, বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রাত্যহিক কার্যক্রমের শুরু হয়। সামাবেশের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত থাকে এবং সমাবেশ তাতে সম্মান প্রদর্শন করে। সমাবেশের শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতির সেবা করার শপথ নেয়। সমাবেশ শেষে ক্লাস শুরু হয় স্ব স্ব শ্রেণীকক্ষে। শ্রেণী কার্যক্রম দুই শিফটে, রুটিন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম হলো সাদা রঙের শার্টপ্যান্ট। শিক্ষার্থীদের থেকে নির্ধারিত ফি'র বিনিময়ে সপ্তাহের পাঁচদিন টিফিন দেয়া হয়, এই ফান্ড পরিচালনার দায়িত্ব থাকে একজন শিক্ষকের উপর। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের ব্যবহারিক পাঠদানের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণসহ বিদ্যালয়ের রয়েছে তিনটি ঐতিহ্যবাহী বিজ্ঞানাগার। এছাড়া রয়েছে প্রায় ছয় হাজারেরও বেশি বই নিয়ে গঠিত বিদ্যালয় গ্রন্থাগার।

বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক, ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিনটি শাখা চালু রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে প্রতিবার বার্ষিক পরীক্ষা শেষে অভিভাবকবৃন্দের উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রম

[সম্পাদনা]

সাধারণ পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষার বাইরে সাহিত্য ও সংস্কৄতি অঙ্গনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন- সাধারণ জ্ঞান, উপস্থিত ও নির্ধারিত বক্তৃতা, বিতর্ক, সংগীত, আবৃত্তি, হামদ্, নাত-এ-রাসূ্ল ইত্যাদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছরই বিদ্যালয়ে বার্ষিক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের হিন্দু ছাত্রগণ বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবছর সরস্বতী পূজাও উদ্‌যাপন করে আসছে। বিদ্যালয়ের রয়েছে বিএনসিসি, স্কাউট, কাব ও ব্যান্ডদল। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহুবিধ অনুষ্ঠানে স্কাউটদল অংশগ্রহণ করে থাকে তারা। অত্র বিদ্যালয়ের স্কাউটরা প্রেসিডেন্ট এ্যাওয়ার্ডসহ [] বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে গৌরবোজ্জ্বল সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের বিএনসিসি কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। এই প্লাটুনটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ক্যাডেটদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।

অন্যান্য

[সম্পাদনা]

এই বিদ্যালয়ে, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রাম ১৯৯৫ সনে শুরু হয়। ১৯৯৫ সনে অত্র বিদ্যালয় টিউটোরিয়াল কেন্দ্রে প্রথম বর্ষে ৫৩জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তখন থেকে বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রম নিয়মিত অব্যাহত আছে।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়"www.habiganjgovthighschool.edu.bd। ২৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৯
  2. "১৩৩ বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়-সারাদেশ-The Daily Ittefaq"archive1.ittefaq.com.bd। ২৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৯
  3. "বাংলাদেশ স্কাউটস"www.scouts.gov.bd/site/page/af2dff2a-56b1-4f62-aabd-9a38307fcef7 (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৯