চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়
ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় | |
| নীতিবাক্য | জ্ঞান সেবা সমৃদ্ধি |
|---|---|
| ধরন | সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
| স্থাপিত | ১৯৯৬ (চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি কলেজ) ২০০৬ (বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর) |
| ইআইআইএন | ১৩৬৬০৩ |
| আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
| উপাচার্য | অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান |
| ডিন | ৪ জন |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ১৬৫ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ১২৬ |
| শিক্ষার্থী | ১৬৭১ |
| ঠিকানা | , , |
| শিক্ষাঙ্গন | শহুরে |
| সংক্ষিপ্ত নাম | সিভাসু |
| অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
| ওয়েবসাইট | www.cvasu.ac.bd |
![]() | |
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে সিভাসু) বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৫ সালের ২৮ নভেম্বর এটি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ৭ই আগষ্ট ২০০৬ সালে এটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। এটি দেশের একমাত্র ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়। সিভাসু বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রাণী ব্লাড ব্যাংক তৈরি করে।[১] বাংলাদেশের প্রথম পেট হাসপাতাল, প্রথম এনাটমি জাদুঘর সিভাসু তৈরি করেছে। স্থানীয়ভাবে এটি ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত।
অবস্থান
[সম্পাদনা]চট্টগ্রামের খুলশী থানার অন্তর্গত এবং নগরীর জাকির হোসেন রোডে এটি অবস্থিত।[২] বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে রয়েছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। আর সামনে পাহাড়তলী এলাকা। আর পেছনদিকে অর্থাৎ, উত্তর দিকে রয়েছে ফয়েজ লেক।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]
১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার সিলেট ও চট্টগ্রামে দুটি ভেটেরিনারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে, দিনাজপুর ও বরিশালে আরো দুটি ভেটেরিনারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি কলেজের প্রাথমিক নাম ছিল চট্টগ্রাম সরকারী ভেটেরিনারি কলেজ, সংক্ষেপে চসভেক। ১৯৯৫ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চট্টগামে আসেন এবং চসভেকের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।[৩] ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে একটি কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজটির পড়াশুনার ব্যাপকতার জন্য, বড় সিলেবাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমতি নিয়ে কলেজটিকে একটি আলাদা অনুষদে রূপান্তরিত করে। তখন পুরো চট্টগ্রামে কোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। ফলে চসভেককেই আলাদা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার জোড় দাবি ওঠে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এই দাবির সাথে একাত্নতা পোষণ করে। এই দাবী মোটামুটি একটি আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রামের সমাজ সেবক ও দৈনিক পূর্বকোণের চেয়ারম্যান ইউসুফ চৌধুরী। তার এই অবদানের জন্য সিভাসুর একটি ভবনের নাম রাখা হয় ইউসুফ চৌধুরী ভবন। এই আন্দোলনের ফলে ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে চসভেককে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ তারিখে এটিকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৭ই আগস্ট এটি যাত্রা শুরু করে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধুমাত্র ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মৎস্যবিজ্ঞান, বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং - আরও তিনটি অনুষদসহ বিশ্ববিদ্যালয়টি তার একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।[৪] চসভেক প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এর প্রিন্সিপাল ছিলেন অধ্যাপক নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হন। ২০১০ সাল পর্যন্ত উপাচার্য হিসেবে ছিলেন।
গবেষণা
[সম্পাদনা]বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিয়মিত গবেষণা প্রকল্প পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে ডিএনএ সেক্সিং প্রযুক্তির সাহায্যে শৌখিন পাখির লিঙ্গ নির্ধারণে সাফল্য পায় সিভাসুর একদল গবেষক। বাংলাদেশে এই প্রযুক্তিতে এই প্রথম সাফল্য অর্জিত হয়। আগে লিঙ্গ নির্ধারণে প্রচুর অর্থ ও সময় ব্যয় করে পাখির নমুনা বিদেশে পাঠাতে হতো।[৫] ৩.৭৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে সিভাসু গবেষণা তরী কাপ্তাই হ্রদে নামানো হয়। এই গবেষণা তরীতে ১২ জন গবেষক একসাথে কাজ করতে পারবেন। এছাড়া এখানে থাকার সু-ব্যবস্থাও আছে। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছ কেন কমে যাচ্ছে, এই সংস্ক্রান্ত কারণ উদ্ঘাটনে গবেষণা প্রকল্পটি শুরু করা হয়।[৬] ২০২০ সালে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস মহামারীতে এই ভাইরাসের জিনোম রহস্য উন্মোচন করে সিভাসু। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ট্রপিকাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাথে যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালানো হয়। চারটি দেশের ভাইরাসের সাথে জিনগত মিল দেখতে পাওয়া যায়।[৭]
শিক্ষাঙ্গণ
[সম্পাদনা]মূল ক্যাম্পাস
[সম্পাদনা]
বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাসেই এর সবরকম প্রশাসনিক কার্যাদি পরিচালিত হয়। মূল ক্যম্পাসে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য পৃথক দুটি হল রয়েছে। একটি হল বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হান্নান হল এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রী হল। এছাড়াও প্রশাসনিক ভবন, ইউসুফ চৌধুরী ভবন, শহীদ মিনারসহ আরো কিছু ভবন রয়েছে। এনাটমি মিউজিয়াম, ফিশারিজ মিউজিয়ামসহ বিভিন্নরকম সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
এস.এ. কাদেরি ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতাল
[সম্পাদনা]১৯৯৫-১৯৯৬ সাল থেকে পশুপাখির চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতাল গড়ে ওঠে। তবে শুরুতে এটি ছিল কেবল একটি টিনশেড বিল্ডিং। ধীরে ধীরে এটি এখন পাঁচতলা ভবনে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ১০০ টির মতো প্রাণী চিতিৎসা নিতে আসে। ২০১৫ সালে এ হাসপাতালে ৪ হাজার ৮০৬টি প্রাণী ও পাখিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এ হাসপাতালে প্রাণী ও পাখির সব ধরনের চিকিৎসাসেবা অর্থাৎ মেডিসিন, সার্জারি ও প্রসবসংক্রান্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোগনির্ণয় থেকে শুরু করে প্রসবজনিত সমস্যা, কৃত্রিম প্রজনন, দাঁতের চিকিৎসা কিংবা জটিল রোগের অস্ত্রোপচার — সবকিছুরই চিকিৎসা হয়।। এছড়া আছে এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফি, সিএস টেস্ট, অ্যান্টিবডি-টাইটার টেস্টসহ সব রকমের পরীক্ষা। একই সঙ্গে পোলট্রি ও দুগ্ধ খামার স্থাপনে প্রয়োজনীয় উপদেশ, পরামর্শ ও নির্দেশনাও দেন এখানকার চিকিৎসকেরা। ছুটির দিন ছাড়া এখানে সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। শনিবার ও অন্যান্য ছুটির দিনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে এ হাসপাতাল।[৮]
জাদুঘরসমূহ
[সম্পাদনা]মৎস্য জাদুঘর
[সম্পাদনা]২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এই মৎস্য জাদুঘরটি নির্মিত হয়। এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।[৯] প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আড়াই হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে এটি অবস্থিত। কর্ণফুলী, হালদা, রাঙামাটির কাপ্তাই লেক, সিলেটের হাওর, পাবনার খালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পুকুর, বিল ও নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে দেশীয় প্রজাতির স্বাদু পানির ২০০ মাছ। স্বাদুর পানির মাছের মধ্যে কাজলি, রানি, গুতুম, খলিশা, ঢেলা, রিঠা, মধুপাবদা, ফলি, বাইম, মহাশোলের মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ, রুই, কাতলা, কালিবাউস, মৃগেল, ইলিশ, ভ্যাদা ইত্যাদি। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। এর মধ্যে কোরাল, কামিলা, মাইট্টা, সুরমা, চান্দা, বিশতারা, তারা, ডেভিল রে, হাতুড়ি হাঙর, শাপলাপাতা, রেমুরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। প্রতিটি মাছের পাশেই এর বৈজ্ঞানিক, স্থানীয় ও সাধারণ নাম এবং বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা থাকবে। এসব মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে পাশাপাশি দুটি কক্ষে অসংখ্য কাচের জারে। ৬৭০ ঘনফুট আয়তনের অ্যাকুয়ারিয়ামও রয়েছে এখানে। যেটাতে মূলত দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে জলজ বাস্তুসংস্থান।[১০]
এনাটমি জাদুঘর
[সম্পাদনা]এটি দেশের প্রথম এনাটমি জাদুঘর। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হেকেপ প্রকল্পের আওতায় এই জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগ এই জাদুঘরটি দেখাশুনা করে। ঘোড়া, গরু, হরিণ, উট, হাঁস, ছাগল, ভেড়া, কবুতর, কুমির, সাপ, টিকটিকি, শূকর, উটপাখি এবং বানরের কঙ্গাল এই জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এখানে ৩০ টি স্টাফ প্রাণী, ২০ টি প্রাণীর মডেল, ফর্মালডিহাইডে ৫০০ টি নমুনা, ২০০০ টি বিভিন্ন ধরনের হাড়, ৩০০০ বিভিন্ন স্লাইড এবং ৩০ জন বৈজ্ঞানিকের স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। কিছু শুকনো নরম অঙ্গও যাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়েছে।[১১]
ছাত্রাবাস
[সম্পাদনা]সিভাসুর শহুরে ক্যাম্পাস এবং হাটহাজারীর ক্যাম্পাস মিলিয়ে হলের সংখ্যা মোট ৪ টি।[১২] সিভাসুর প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অবদান রাখেন তৎকালীন মৎস্য মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. নাজির আহমেদ। তাদের নামেই সিভাসুর হলগুলোর নামকরণ করা হয়েছে।[১৩]
- বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমান হল
- বিজয় ২০২৪ হল
- ডাঃ নাজির আহমেদ হল (হাটহাজারী ক্যাম্পাস)
- বেগম রোকেয়া হল (হাটহাজারী ক্যাম্পাস)
কোস্টাল বায়োডাইভার্সিটি, মেরিন ফিশারিজ ও ওয়াইল্ডলাইফ রিসার্চ সেন্টার
[সম্পাদনা]২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এই ক্যম্পাস তৈরির কাজ শুরু হয়। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন দরিয়ানগর এলাকায় এই ক্যাম্পাস অবস্থিত। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।[১৪] এটিই বাংলাদেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আউটরিচ ক্যাম্পাস। ছাত্রদের জন্য পৃথক দুটি ছাত্রাবাস এবং শিক্ষকদের জন্য আবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। ক্যাম্পাসটি তৈরির জন্য প্রাথমিকভাবে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় এবং পাহাড়ে ঘেরা ৫ একর জমি দেয়া হয়। ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাম্পাসটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।[১৫]
গবেষণা ও খামারভিত্তিক ক্যাম্পাস, হাটহাজারী
[সম্পাদনা]
প্রায় ১০ একর জায়গা নিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকায় এই ক্যাম্পাস অবস্থিত। এই ক্যাম্পাসের পাশেই সরকারি ডেইরি ফার্ম অবস্থিত। এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা হাতে কলমে কাজ করতে পারবেন। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করা হয়।[১৬] এখানে দুটি ফ্যাকাল্টি খোলা হবে। একটি ফ্যাকাল্টি অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, আরেকটি ফ্যাকাল্টি অব এনভাইরনমেন্টাল সায়েন্স।[১৭] ২০২০ সালে এই ক্যাম্পাসে কোভিড ১৯ সনাক্তকরণ ল্যাব চালু করা হয়। উপ-শিক্ষামন্ত্রী নওফেল এই ল্যাবের উদ্বোধন করেন।
টিচিং অ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার
[সম্পাদনা]এটি বাংলাদেশের প্রথম পেট হাসপাতাল। পাশাপাশি পশুপাখির গবেষণা এবং ইন্টার্নি ডাক্তারেরা এখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন। ঢাকার পূর্বাচলে ২২ কাঠা জমির ওপর এই হাসপাতাল অবস্থিত।[১৮]
প্রাতিষ্ঠানিক গুণমান নিশ্চিতকরণ সেল
[সম্পাদনা]বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ধারাবাহিকতা এবং ভাল অনুশীলনের প্রমাণ বজায় রাখার জন্য, প্রাতিষ্ঠানিক গুণমান নিশ্চিতকরণ সেল (IQAC) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জাতীয় QA নির্দেশিকা এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলন অনুসারে গুণমান নিশ্চিতকরণ সংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণমান নিশ্চিতকরণ পদ্ধতিগুলি QAU নির্দেশিকা এবং জাতীয় প্রয়োজনীয়তা অনুসরণ করে ডিজাইন করা; ধারাবাহিক গুণমান নিশ্চিতকরণ অনুশীলন এবং কর্মক্ষমতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শিক্ষার গুণমান এবং জনগণের উপলব্ধি বিকাশ, বজায় রাখা এবং উন্নত করা; ব্যবস্থাপনার সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ভাল অনুশীলন নিশ্চিত করা, বাহ্যিক মানের নিশ্চয়তা মূল্যায়ন এবং স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রস্তুত করাই এই দপ্তরের অভিলক্ষ্য। [১৯]
অনুষদ ও বিভাগসমূহ
[সম্পাদনা]চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৪টি অনুষদে ২৩টি বিভাগ রয়েছে।[২০] চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ এবং অন্তর্গত বিভাগসমূহ হলো:
ভেটেরিনারী মেডিসিন অনুষদ
[সম্পাদনা]- রোগবিদ্যা ও পরজীবীবিদ্যা বিভাগ
- অ্যানাটমি ও কলাস্থান বিভাগ
- শারীরবিদ্যার, প্রাণরসায়ন ও ঔষধবিদ্যা বিভাগ
- প্রাণী বিজ্ঞান ও পুষ্টি বিভাগ
- অনুজীবিদ্যা ও ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগ
- জেনেটিক্স ও পশু প্রজনন বিভাগ
- ডেইরি ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগ
- কৃষি অর্থনীতি ও সামাজিক বিভাগ
- মেডিসিন ও সার্জারী বিভাগ
খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ
[সম্পাদনা]- পদার্থ ও গাণিতিক বিজ্ঞান বিভাগ
- ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগ
- ফলিত খাদ্য বিজ্ঞান ও পুষ্টি বিভাগ
- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকৌশল বিভাগ
মৎস্য অনুষদ
[সম্পাদনা]- মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- ফিসিং ও পোস্ট হার্ভেস্ট প্রযুক্তি বিভাগ
- সামুদ্রিক জৈব-গবেষণা বিভাগ
- কৃষি বিভাগ
- মাছের জীববিদ্যা এবং জৈব প্রযুক্তি বিভাগ
বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
[সম্পাদনা]- সেলুলার ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগ
- ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি বিভাগ
- ইনভাইরনমেন্টাল বায়োটেকনোলজি বিভাগ
- বায়োপ্রসেস ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
- জিনোমিকস ও বায়োইনফরমেটিক্স বিভাগ
গবেষণা কেন্দ্রসমূহ
[সম্পাদনা]অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]ঝিনাইদহ সরকারী ভেটেরিনারি কলেজকে ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষে সিভাসুর অধিভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে নানা জটিলতার কারণে কলেজটিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হয়।[২৫] বর্তমানে সিভাসুর অধীনে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অধিভুক্ত নেই।
উপাচার্যবৃন্দের তালিকা
[সম্পাদনা]| ক্রমিক নং | নাম | ছবি | মেয়াদকাল | |
|---|---|---|---|---|
| ১ | নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ | ২০০৬-২০১০ | ||
| ২ | আবু সালেহ মাহফুজুল বারি | ২০১০-২০১৪ | ||
| ৩ | গৌতম বুদ্ধ দাশ | ২০১৪-২০২২ | ||
| ৪ | এ এস এম লুৎফুল আহসান | ১ জানুয়ারি ২০২৩- ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ [২৬] | ||
| ৫ | মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪ - বর্তমান[২৭] |
কৃতি ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]কৃতি শিক্ষার্থী
[সম্পাদনা]- সালমা সুলতানা, কৃষিক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ে অবদান রাখার জন্য ২০২০ সালে নোরমান বোরলগ পুরস্কার বিজয়ী
- এ এস এম লুৎফুল আহসান, সিভাসুর প্রাক্তন উপাচার্য
- সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য
কৃতি শিক্ষক
[সম্পাদনা]- গৌতম বুদ্ধ দাশ, একুশে পদক জয়ী
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম এনিম্যাল ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা"। ৮ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- 1 2 "অভিভাবকহীন সিভাসু, উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে যারা"। banglanews24.com। ১৪ অক্টোবর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দেশেই হবে শৌখিন পাখির লিঙ্গ নির্ধারণ"। প্রথম আলো। ১৫ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৯।
- ↑ "রাঙ্গামাটিতে গবেষণা তরী নামার জন্য প্রস্তুত"। দ্যা ডেইলি স্টার। ৫ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৯।
- ↑ "জিনোম সিকোয়েন্স: চট্টগ্রামের করোনাভাইরাসের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, সিংগাপুরের ভাইরাসের মিল"। ২১ মে ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০২০।
- ↑ "মানুষের মতো চিকিৎসা প্রাণীদের"। প্রথম আলো। ৬ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও মৎস্য জাদুঘরের উদ্বোধন"। ১৪ জানুয়ারী ২০১৭। ১১ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২০।
{{সংবাদ উদ্ধৃতি}}:|তারিখ=এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) - ↑ "মৎস্য ও অ্যানাটমি জাদুঘর"। ৯ জানুয়ারী ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২০।
{{সংবাদ উদ্ধৃতি}}:|তারিখ=এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) - ↑ "দেশের প্রথম শরীরবৃত্তির জাদুঘর সিভাসুতে"। ২৮ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সিভাসুর চার হলের নামকরণ"। banglanews24.com। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২৫।
- ↑ Nayan (১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)। "সিভাসুর চার আবাসিক হলের নামকরণ"। দৈনিক আজাদী (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "কক্সবাজারে আউটরিচ ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর আজ"। ২২ নভেম্বর ২০১৫। ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "আরও একটি ক্যাম্পাস হবে কক্সবাজারে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "গবেষণা ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আজ"। ২ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "সিভাসু'র ২য় ক্যাম্পাস পরিদর্শনে ইউজিসি'র প্রতিনিধি দল"। ১৯ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "দেশের প্রথম পেট হসপিটালের যাত্রা শুরু আজ"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "Institutional Quality Assurance Cell (IQAC)"। cvasu.ac.bd। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ "List of Faculties"। www.cvasu.ac.bd (ইংরেজি ভাষায়)। ১ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Poultry Research and Training Centre (PRTC)"। www.cvasu.ac.bd (ইংরেজি ভাষায়)। ১ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "one health institute" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Institute of Coastal Bio-Diversity, Marine Fisheries & Wildlife Conservation" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ MidDayDreams। "Institute of Food Safety and Nutrition (IFSN) | Chattogram Veterinary and Animal Sciences University"। cvasu.ac.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "শেকৃবির অধিভুক্ত হচ্ছে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ"। ২৮ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ "সিভাসু'র নতুন ভিসি লুৎফুল আহসান"। সারাবাংলা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ"। কালবেলা। ১৭ অক্টোবর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪।
- ↑ "নোরমান ই বোরলগ পুরস্কার পেলেন সালমা সুলতানা"। BDnews24। ১৪ অক্টোবর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০২০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
- বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
- চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলাদেশের ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়
- বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম জেলার বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলাদেশের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকেন্দ্র
- ১৯৯৬-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

