বগুড়া উডবার্ন জেলা সরকারি গ্রন্থাগার
গ্রন্থাগারের বর্তমান পাঠকক্ষ | |
| ধরন | সরকারি গ্রন্থাগার |
|---|---|
| প্রতিষ্ঠিত | ১৮৫৪ |
| অবস্থান | বগুড়া |
| স্থানাঙ্ক | ২৪°৫০′৪৮″ উত্তর ৮৯°২২′১০″ পূর্ব / ২৪.৮৪৬৫৪৫° উত্তর ৮৯.৩৬৯৫৮৩° পূর্ব |
| মূল সংগঠন | গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর |
| ওয়েবসাইট | publiclibrary |
| মানচিত্র | |
![]() | |
বগুড়া উডবার্ন জেলা সরকারি গ্রন্থাগার বা উডবার্ন লাইব্রেরি উত্তর বঙ্গের বগুড়ায় অবস্থিত একটা সরকারি গ্রন্থাগার।[১] গ্রন্থাগারটি ১৮৫৪[২] সালে মি. রিয়েল নামের একজন ইংরেজ কর্মকর্তার সহায়তায় করতোয়ার তীরে স্টেশন ক্লাব এলাকায় কাঠের ভবনে যাত্রা শুরু করে।[৩] পুরনো এই লাইব্রেরিতে পনেরো শতকের রাজকবি শ্রীমদ্ জ্ঞানেন্দ্র কুমার ভট্টাচার্যের সংস্কৃত ভাষায় লেখা তিনটি পুঁথির দুর্লভ পাণ্ডুলিপি সহ অনেক দুর্লভ সংগ্রহ রয়েছে। গ্রন্থাগারের অধিকাংশ বই ৫০ থেকে ১৫০ বছরের পুরনো।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]এ গ্রন্থাগারটি ১৮৫৪ সালে প্রথম স্থাপিত হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ গভর্নর জন উডবার্ন উত্তরাঞ্চলের রংপুর, বগুড়া এবং দক্ষিণাঞ্চলের যশোর ও বরিশাল জেলায় ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে চারটি গ্রন্থাগার স্থাপন করে। এর মধ্যে বগুড়ায় একটি গ্রন্থাগার স্থাপন কর হয়।[৪] বগুড়ার তৎকালীন নবাব আব্দুস সোবহান চৌধুরী এ গ্রন্থাগারের জন্য ভবন নির্মাণ করে দেন। ১৯০৮ সালে বগুড়ার তৎকালীন কালেক্টর ও বাংলার গভর্নর জে এন গুপ্ত স্যার জন উডবার্নের নামে এর নামকরণ করেন। ১৯৩০ সালে এটি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন নবাব সৈয়দ আবদুস সোবহান চৌধুরীর সহায়তায় এটি অ্যাডওয়ার্ড পার্কে স্থানান্তর করা হয়েছিল।[৫]
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে গ্রন্থাগারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধকালিন ক্যাম্পের খাবার রান্নায় জ্বালানী হিসাবে উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরীর প্রায় ১৮ হাজার বই ব্যবহার করে। এ সময়ে আরও অসংখ্য দুষ্প্রাপ্য এবং মূল্যবান বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬]
‘বগুড়া জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার’ ১৯৮৪ একটি ভাড়া বাসায় যাত্রা শুরু করে। ১৯৯৬ সালের ২৭ জুন বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী উডবার্ণ গণগ্রন্থাগারকে সরকারিকরণের বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আলোচনার প্রেক্ষিতে বগুড়া পৌর উদ্যানে বা অ্যাডওয়ার্ড পার্কে অবস্থিত উডবার্ণ সরকারি গণগ্রন্থাগারের দোতলা ভবন ও জায়গা গ্রহণের বিনিময়ে পৌর উদ্যানের দক্ষিণ-পশ্চিমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ হয়। জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সঙ্গে উডবার্ণ গণগ্রন্থাগার একীভূত করে নতুন নামকরণ করা হয় ‘উডবার্ণ সরকারি গণগ্রন্থাগার’।[৭]
সংগ্রহ
[সম্পাদনা]নতুন ও পুরনো মিলে গণগ্রন্থাগারটিতে ৫০ হাজারের অধিক বই রয়েছে।[৭] একীভূত হওয়ার সময় উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগারে প্রায় ২৮ হাজার বই থাকলেও ৮ হাজার ২শত ৫২টি বই সরকারি গণগ্রন্থাগার বুঝে পায়। এখানে পনেরো শতকের রাজকবি শ্রীমদ্ জ্ঞানেন্দ্র কুমার ভট্টাচার্যের সংস্কৃত ভাষায় লেখা তিনটি পুঁথির দুর্লভ পাণ্ডুলিপি রয়েছে। প্রাচীন তুলট কাগজে দোয়াতকালি ও বাঁশের কলমে লেখা প্রতিটি পাণ্ডুলিপি প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার। পুঁথি তিনটির নাম পদ্মপুরাণ, গোবিন্দ কথামৃত ও হিরণ্যকশিপু। সংস্কৃত ও ইংরেজি ভাষার বই সহ পুরনো গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, জার্নাল, রেফারেন্স বই সহ আট হাজারের মতো বই রয়েছে এখানে।[৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Television, Independent। "জনবল ও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সংকটে বগুড়ার উডবার্ন লাইব্রেরি"। www.independent24.com/। ১৪ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "দৈনিক জনকন্ঠ || গ্রন্থাগারিক ছাড়াই বগুড়া গণগ্রন্থাগার"। দৈনিক জনকন্ঠ।
- ↑ "১৬৩ বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে উডবার্ন লাইব্রেরি"। banglanews24.com।
- ↑ "হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাচীন লিপি"। ইত্তেফাক। ৩১ জানুয়ারি ২০২৩। ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৫।
- 1 2 "উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরিতে বগুড়ার প্রাচীন উপাখ্যান কালের সাক্ষ"। জনকণ্ঠ। ৩ মার্চ ২০২৩। ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৫।
- ↑ "উডবার্ন লাইব্রেরির তিনশ বছরের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি হুমকির মুখে"। tbsnews। ২ ডিসেম্বর ২০২০। ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৫।
- 1 2 "বগুড়ার উডবার্ণ সরকারি গণগ্রন্থাগারে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া"। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২। ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৫।
